এনএপিতে স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে : পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

মোঃ সাইফুল ইসলামঃ 

জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় (এনএপি) স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলে মনে করেন পরিবেশে, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় সুইডিশ দূতাবাসের জলবায়ু স্বাস্থ্য ও পরিবেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি ডা. ড্যানিয়েল নোভাকের সঙ্গে বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) নিয়ে আপনারা জানেন। ২০২২ সালে এটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তারপর থেকে লক্ষ্য করেছিলাম জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যের মধ্যে একটা জোরালো সম্পর্ক আছে। আমরা যখন এনএপি চূড়ান্ত করি, তখন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটা রেফারেন্স ছিল। তবে সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের যে ১১৩টি এজেন্ডার মধ্যে স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা কোনো কাজ করিনি। এখন আমরা ভাবছি, এনএপিতে স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে জরিপ আমরা করেছি বা বিভিন্ন তথ্য আমরা পাচ্ছি, বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকা ও নারীদের মধ্যে নীতিবাচক প্রভাব আছে। এতে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি চলে আসে। আমাদের উপকূলীয় এলাকায় এমনিতেই অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেখানে লবণাক্ততা একটি বড় চ্যালেঞ্জ আছে। সুপেয় পানির সংকট আছে, তারওপর স্বাস্থ্যের বিষয়টিও চলে আসে।’

‘যদিও স্বাস্থ্যের বিষয়টি আমাদের পরিবেশে সরাসরি আসে না। তারপরেও যখন জনস্বাস্থ্যের কথা বলি, তার সঙ্গে পরিবেশের একটা সম্পর্ক আছে। কাজেই একদিকে উন্নয়ন, আরেকদিকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য। এই তিনটি একজায়গায় চলে আসে। কাজেই আমাদের পক্ষে নতুন করে একটি ম্যাপ তৈরি করা সম্ভব না, প্রয়োজনও নেই। তবে বর্তমানে ম্যাপের যে কাঠামো আছে ও ১১৩টি এজেন্ডায় স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে আসতে চাই’।

‘ঢাকায় সুইডিশ দূতাবাস অনেকদিন ধরে এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তারা আগেও তাদের কিছু সুপারিশ আমাদের জানিয়েছে। কাজেই কীভাবে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা সামনের দিকে যেতে পারি, তা নিয়ে আজ তাদের সঙ্গে কথা বলেছি,’ যোগ করেন সাবের হোসেন চৌধুরী।

‘আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্যকে যে ধরনের গুরুত্ব দেওয়া উচিত, আগামীতে সেটা আমরা করতে চাই। আমরা আলাদাভাবে স্বাস্থ্যের ম্যাপ করবো না, তবে বর্তমানে যে ম্যাপ আছে, তাতে স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে যোগ করতে চাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সুইডেনের সঙ্গে আমাদের যে উন্নয়ন সম্পর্ক আছে, এই ক্ষেত্রটিকে ধরে সেটিকে আরও জোরদার করতে চাই।’সুইডেন কেন এটাতে গুরুত্ব দিচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, অভিযোজনের মূল চিন্তাটা কী, মানে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত আমরা কীভাবে মোকাবিলা করবো! আমরা হয়ত আগে ভাবতাম বন্যার কথা। সেগুলো অবশ্যই আছে। তবে বন্যা, সাইক্লোন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কথা বলি, লবণাক্ততা ও খাদ্য নিরাপত্তার কথা বলি, তার সঙ্গে আমরা এখন স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে এসেছি।

‘আমরা দেখছি, জলবায়ুর প্রভাবটা সব জায়গায়ই আছে। যেহেতু বিষয়গুলো আমাদের কাছে বেশ পরিষ্কার ও সম্পর্কটা জোরালো। আর এটা কেবল বাংলাদেশেই না, সারা বিশ্বে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কপ ২৮-এ দুবাইতে স্বাস্থ্যের জন্য একটা দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে এটার প্রভাব বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। সেটা আমরা কীভাবে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারি, সেটা দেখতে হবে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, সুইডিশ দুতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রোম।