এনবিআরে আজও বিক্ষোভ, চেয়ারম্যানের শাস্তি দাবি

প্রকাশিত: ২:১২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্ত ও শাস্তির দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভে চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেছেন কর্মচারীরা। তাদের দাবি এনবিআর চেয়ারম্যান এতদিন কর্মচারীদের ওপরে জুলুম ও অবিচার করেছেন। নিজের ইচ্ছেমতো পদোন্নতি ও নিয়োগ দিয়েছেন। যোগ্যতা থাকার পরও অনেক কর্মচারী পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগ ও বিচার দাবি করছি।
যদিও গতকাল থেকেই গুঞ্জন রয়েছে এনবিআর চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। তবে এখনও অফিসিয়াল কোনো সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। সর্বশেষ গত ৬ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যান অফিসে আসেন।

এনবিআরের কর্মচারীরা বলছেন, আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন বাইরের ক্যাডার নিয়ে এসে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে? আমাদের শুল্ক, আবগারী ক্যাডার থেকে ২ বছরের জন্য ও ইনকাম ট্যাক্স ক্যাডার থেকে ২ বছরের জন্য মেম্বারদের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিলে কী সমস্যা? আমাদের কষ্ট তারা বুঝতে পারবেন। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা আমাদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মতো করে আমাদের চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়। আমাদের প্রমোশন হওয়ার কথা ছিল সিরিয়াল মোতাবেক, অতীতেও হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন লোকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ইচ্ছে মতো যাকে তাকে সামান্য অজুহাতে সিরিয়াল ভঙ্গ করে নিজের পছন্দ মতো করে প্রমোশন ও বদলি হয়েছে। সময় মতো পদোন্নতি দেওয়া হয়নি, ডিপিসি করা হচ্ছে না, পদোন্নতির পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না, নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।
কর্মচারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তাকে প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।

২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।

৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।

৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ববান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।

৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।

৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।

৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।

৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।