এমপক্সের সংক্রমণ করোনার মতো ছড়াবে না, নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:

এমপক্স নামে পরিচিত মাঙ্কিপক্স- এর সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মতো ছড়াবে না। এই ভাইরাস নতুন নয়, এটি সম্পর্কে সবকিছুই মোটামুটি জানা। এমপক্সকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সেটা আমরা জানি। ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় পরিচালক হ্যানস ক্লুগ এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এরই মধ্যে এমপক্স নিয়ে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও ভাইরাসটির ক্লেড ১বি ধরন নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। খবর- আলজাজিরা

এমপক্স ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ২০২২ সালের জুলাইয়ে জনস্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পরে ২০২৩ সালের মে মাসে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়। তখন তুলনামূলক কম সংক্রামক ক্লেড ২বি ধরন ছড়িয়েছিল। এই ধরনটি প্রধানত সমকামী ও উভকামী মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। হ্যানস ক্লুগ বলেন, এমপক্স নতুন কোনো করোনা হবে না।
বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি হতে না হতেই ইউরোপের সুইডেনে শনাক্ত হলো নতুন ধরনের অতি সংক্রামক রোগ এমপক্স। সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে- আক্রান্ত ওই ব্যক্তি সম্প্রতি আফ্রিকার কোনো একটি অঞ্চলে ছিলেন। সেখানেই তিনি আক্রান্ত হন। আফ্রিকার ওই অঞ্চলে সম্প্রতি এমপক্স ক্লেইড ১ ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। পূর্বে এই ভাইরাসটি মাঙ্কিপক্স নামেই পরিচিত ছিল।

সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান অলিভিয়া বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তি স্টকহোমে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তবে সুইডেনে তিনি চিকিৎসা নেওয়ার মানেই এই নয় যে, বৃহত্তর পরিসরে মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাসজনিত এ সংক্রমণ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) পর মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতেও ছড়িয়েছে। মাংকিপক্স হিসেবে পরিচিত অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব চলাকালে কঙ্গোয় অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়। এমপক্সের দু’টি ধরন আছে, ক্লেইড ১ ও ক্লেইড ২। এর আগে ২০২২ সালে ক্লেইড ২ এর তুলনামূলক মৃদু সংক্রমণ চলাকালে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এবার অনেক বেশি প্রাণঘাতী ক্লেইড ১ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে।

মাঙ্কিপক্স ভাইরাস প্রথম পশু থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়ার পর এখন মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াচ্ছে। এমপক্স ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ যেমন, যৌন সম্পর্ক, গায়ে গা লাগা ও অন্য জনের খুব কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিঃশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে ছড়ায়।

এই রোগের সংক্রমণে জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয় আর এটি প্রাণঘাতী হতে পারে; এই রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।

বিশ্বে দ্রুতগতিতে মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স ছড়িয়ে পড়ায় দেশের তিন বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিমানবন্দরগুলো হলো- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ১৭ আগস্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বিজ্ঞপ্তিতে এয়ারলাইনসগুলোকে সতর্ক থাকতে এবং কোনো লক্ষণযুক্ত যাত্রী থাকলে দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করতে বলা হয়। আগমনের ২১ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দিলে যাত্রীদের ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতেও অনুরোধ করা হয়।

আফ্রিকার কিছু অংশে এমপক্সের প্রাদুর্ভাবকে জরুরি জনস্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও। সংক্রামক এই রোগে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।