এসএসসির হলে ঢুকে ছাত্রীদের পানি পান করানোয় ছাত্রদল নেতার সমালোচনা

প্রকাশিত: ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০২৫

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর কবিরহাটে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে অবস্থান করে সাইফুল ইসলাম আকাশ নামের এক ছাত্রদল নেতার পানি বিতরণের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে সমালোচনার পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পরীক্ষা কক্ষে ছাত্রদল নেতার পানি বিতরণের কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) কবিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

সাইফুল ইসলাম আকাশ কবিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক। গত ২৩ মার্চ (রোববার) দুপুরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির কবিরহাট সরকারি কলেজসহ নোয়াখালীর ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদন দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কবিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে কবিরহাট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নরোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও নরোত্তমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে অবস্থান করে কবিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আকাশকে পানি বিতরণ করতে দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, ছাত্রদল নেতা পরীক্ষা কক্ষে ঢুকছে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি আমরা স্যারদের বলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
মো. রফিক উল্যাহ নামে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ থাকার বিধান নেই। সেখানে পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রদলের নেতা কীভাবে কক্ষে প্রবেশ করল, তার জন্য কেন্দ্র সচিবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম আকাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কোনো অসদুপায় করতে হলে প্রবেশ করিনি। আমি পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে ঢুকে পানি বিতরণ করেছি। কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর অংশ হিসেবে আমরা পানি, হেল্প ডেস্ক, ছাউনি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছি। কিন্তু প্রতিহিংসা করে আমাকে বিপদে ফেলতে ছবিগুলো প্রচার করেছে।

এদিকে কবিরহাট সরকারি কলেজ উপকেন্দ্রের (৫৪২) সচিব মো. ওহিদুরজ্জামানকে বারবার ফোন দিলেও তারা কেউ রিসিভ করেননি। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রের অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল-আশফাক অনিক পরীক্ষা কক্ষে ছাত্রদল নেতার প্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কেন্দ্রে পুলিশি নিরাপত্তা পর্যাপ্ত না থাকায় এমনটা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর আমরা সেনাবাহিনীকে ব্যবস্থা নিয়েছি।

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমন বিষয় আমার জানা নেই। তবে ওই কেন্দ্রে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও একজন কনস্টেবল দায়িত্বপালন করেছেন। কেন্দ্র বেশি হওয়ায় এর বেশি পুলিশ দেওয়া যায়নি। তবে সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমিও গিয়েছিলাম। কেউ এমন অভিযোগ দেয়নি।

বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূদম পুষ্প চাকমার মোবাইলে ও হোয়াটঅ্যাপে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য যুক্ত করা সম্ভব হয়নি।