ডেস্ক রিপোর্ট:
ওজন কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেমাগ্লুটাইড নামে বহুল ব্যবহৃত ডায়াবেটিসের ওষুধের চেয়ে বেশি কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে। গবেষকদের বরাত দিয়ে গালফ নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
তিরজেপাটাইড নামে এই ওষুধ দুই ধরনের ডায়াবেটিসের চিকিৎসার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে অনুমোদন পেয়েছে। মাউঞ্জারো ব্র্যান্ড নামে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট এলি লিলি এটি বাজারজাত করছে।
স্থূলতা কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধটির অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে এলি লিলি। ডেনমার্কের কোম্পানি নভো নরডিস্কের তৈরি ওজেম্পিক নামে সেমাগ্লুটাইড এবং ওজন কমানোর ওষুধ ওয়েগোভির চেয়ে এগিয়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জার্মানির কনফারেন্সে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এলি লিলির নতুন ওষুধটি আরও কার্যকরী।
ওজন কমাতে সহায়তার জন্য এ বছরের শুরুতে ওজেম্পিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। আকাশচুম্বী চাহিদার জন্য সরবরাহের ঘাটতি দেখা যায়।
গ্রীসের গবেষকেরা আগের ২২টি পরীক্ষার সমন্বিত ডেটার মাধ্যমে দুটি ওষুধকে আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণ করে। সপ্তাহে একদিন দুটি ইনজেকশন শরীরে পুশ করা হয়। এরপর গবেষকেরা তাদের ফলাফলকে কমপক্ষে ১২ সপ্তাহ ধরে উভয় ওষুধের তিনটি ভিন্ন ডোজের সঙ্গে তুলনা করেন। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ১৮ হাজার ৫০০ জন রোগীদের ওপর গবেষণাটি করা হয়।
গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক থোমাস কারাগিয়ানিস বলেন, তিরজেপাটাইড ব্যবহারের ফলে গড় ওজন কমে, যা সেগমাগ্লুটাইডের চেয়ে ৫ দশমিক ৭ কিলোগ্রাম বেশি। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা সেমাগ্লুটাইডের চেয়ে দুই শতাংশ কমিয়ে দেয়।
ওষুধটি ‘সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন’ যাদের
আগামী মাসে জার্মানিতে ডায়াবেটিস স্টাডির জন্য ইউরোপীয় সমিতির বার্ষিক সভায় গবেষণাটি উপস্থাপন করা হবে। যুক্তরাজ্যের অ্যাশটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডুয়ান মেলর সতর্ক করে বলেন, এখনও গবেষণাটির পিয়ার রিভিউ হয়নি।
আগের এক গবেষণায় দেখা যায়, তিরজেপাটাইড ৭২ সপ্তাহে ব্যবহারের ফলে ১৫ শতাংশ ওজন কমে। তবে, ওজেম্পিকের মত এর ব্যবহার বাদ দিলে ওজন আগের অবস্থানে ফিরে যায়।
দুটি ওষুধই গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (পরিপাকনালির) হরমোন জিএলপি–১ এর অনুকরণ করে। এই হরমোন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত মস্তিষ্কের রিসেপ্টরকে সক্রিয় করে তোলে। তবে তিরজেপাটাইড জিআইপি হরমোনকে টার্গেট করে, যা ইনসুলিন নিঃসরণে সাহায্য করে।
এ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল–জুন) মাউঞ্জারোর বিক্রি ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।