ওয়াশিংটন পোস্টে পদত্যাগের হিড়িক, কমছে পাঠক

প্রকাশিত: ১২:২৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়ায় পত্রিকাটির সম্পাদকীয় বোর্ডের তিন সদস্যসহ অন্তত পাঁচ সাংবাদিক পদত্যাগ করেছেন। এর আগে পত্রিকাটির ২ লাখ ডিজিটাল গ্রাহক কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক জেফ বেজোস ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পক্ষে নিবন্ধ প্রকাশের অনুমোদন না করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সিএনএন ও গার্ডিয়ানের খবর।
পত্রিকাটির সম্পাদকীয় বিভাগের প্রধান ডেভিড শিপলি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলাকে সমর্থনের ব্যাপারে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে পত্রিকার মালিক জেফ বেজোস বিষয়টির অনুমোদন দেননি। শিপলি বলেন, ‘আমি বেজোসকে ব্যাপারটি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি।’ পদত্যাগকারী অপর দু’জন বোর্ড সদস্য হলেন– মলি রবার্টস ও ডেভিড ই হফম্যান। এ ছাড়া পদত্যাগকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক মিলি মিত্র ও রবার্ট কাগান। সাংবাদিক হফম্যান এ বছর পুলিৎজার পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি সিএনএনকে বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের মানুষকে যেসব হুমকি দিয়েছিলেন, তা ভুলে যেতে চান না। এই অবস্থায় সম্পাদকীয় বোর্ডে আমি থাকতে চাই না। আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন স্বৈরাচারীকে নিয়ে চুপ থাকতে পারি না।

মলি রবার্ট বলেন, কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করা নৈতিকভাবে স্পষ্ট। ট্রাম্প চান আমরা যারা গণমাধ্যমে কাজ করি তারা যেন নীরব থাকি।
রবার্ট কাগান ২৫ বছর ধরে ওয়াশিংটন পোস্টে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিসের সমর্থন আটকানো মানেই জেফ বেজোস ট্রাম্পের পক্ষ নিয়েছেন। অনলাইন শপিং সংস্থা অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা বেজোস ২০১৩ সাল থেকে ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক। কমলাকে সমর্থন না করায় পত্রিকাটির সাবস্ক্রিপশন বাতিল বেড়েই চলেছে। দৈনিকটির মোট ২০ লাখ পাঠকের মধ্যে অন্তত ৮ শতাংশ কাগজটি আর পড়তে চান না বলে জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে ১০ শতাংশ পাঠক কমে গেছে। ওয়াশিংটন পোস্টের পেইড সাবস্ক্রাইবার প্রায় আড়াই কোটি। সোমবার পর্যন্ত তারা প্রায় ৮ শতাংশ সাবস্ক্রাইবার হারিয়েছে। এ নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।

একটি সূত্র জানায়, যেদিন বেজোস ওই লেখা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন, সেই শুক্রবারই তাঁর এরোস্পেস সংস্থা ‘ব্লু অরিজিন’-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হয়েছিল। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে নীরবতা ভেঙেছেন বেজোস।

তিনি জানিয়েছেন, ওই সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের কথা তিনি জানতেন না। কমলাকে নিয়ে লেখা না ছাপানোর সিদ্ধান্তকে তিনি কাগজের ‘নিরপেক্ষ নীতি’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। তবে সেই সঙ্গে বেজোস লিখেছেন, দ্বন্দ্বের কথা যখন আসে, তখন মনে হয় পোস্টের মালিক আর আমার থাকা উচিত নয়। তবে আমি সবাইকে আশ্বাস দিতে পারি, আমার এই কাগজ ২০১৩ সাল থেকেই কিছু মূলনীতির ভিত্তিতে চলে এসেছে এবং আগামী দিনেও সেভাবেই চলবে।