
রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও উপপরিদর্শক (এসআই) হিমাদ্রি হাওলাদারসহ একই থানার তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি করেন। রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহিদ উদ্দিন মোল্লা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পাংশা থানার ওসি মো. সালাউদ্দিনের নির্দেশে এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার ও আরিফ হোসেনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ওই নারীর বাড়িতে অভিযান চালান। তারা স্বামীকে খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন রুমে তল্লাশি করেন। একপর্যায়ে স্বামীকে না পেয়ে ওই নারীকে রুম থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং যৌন নির্যাতন চালান।
এরপর তাকে থানায় নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই ভুক্তভোগী। পরে স্থানীয়রা থানায় গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয় এবং কিছু টাকা নেয়াও হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী পরিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন।
এদিকে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, উপজেলার মাছপাড়ার এক কিশোরী (১৭) অপহরণের ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলার ৩ নম্বর আসামি ওই নারীর স্বামী এবং ৫ নম্বর আসামি ওই নারী। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার।
ওসি আরও বলেন, ওই ধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত করার পর জানা যায় অপহৃত কিশোরী ওই নারীর কাছে আছে। এরপর ৩ এপ্রিল রাতে অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে আটক করে থানায় আনার পর ছাড়িয়ে নিতে নানা স্থান থেকে ফোন করা হয়। তাঁদের কথামতো পরদিন ৪ এপ্রিল কিশোরীকে এলাকায় দিয়ে তাদের জিম্মায় ওই গৃহবধূকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি থানা থেকে ছাড়া পেয়েই মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশকে হয়রানি করছেন। বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন বলে জানান ওসি ।
এই বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. জাহিদ উদ্দিন মোল্লা জানান, অভিযোগ তদন্তের জন্য মামলার নথিপত্র পিবিআই দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এবং মামলাটি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্তের জন্য ফরিদপুর পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।