কথা না মানায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের চাবি নিয়ে গেল বিএনপি নেতা!

প্রকাশিত: ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২৫

পিরোজপুর প্রতিনিধি:

পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম আহসান কবিরের কথা না শোনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাবি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময়ে দোকানের ক্যাশিয়ার ও কর্মচারীদের মারধর করে সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ডিভিআর ছিনিয়ে নেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত একটি ঘাট ইজারা নিয়ে। ভুক্তভোগী উপজেলার আমড়াজুড়ি এলাকার বাসিন্দা লিমন তালুকদার বলেন, আমড়াজুড়ি খেয়াঘাট ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করে পিরোজপুর জেলা পরিষদ। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র কিনে স্থানীয় সুলতান মাঝি দরপত্র জমা দেন। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম আহসান কবিরের অনুসারী লোকজন দরপত্র জমা দিতে প্রথমে নিষেধ করেন। দরপত্র জমা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০-২৫ জনের একটি দল লিমান তালুকদার ও সুলতান মাঝিকে দেখে নেওয়ার প্রকাশ্য হুমকি দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমড়াজুড়ি ফেরিঘাট এলাকায় লিমন তালুকদারকে খুঁজতে যায় আহসান কবিরের লোকজন। তাকে না পেয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‌‌‘মদিনা ডেইরি অ্যান্ড সুইটস’ এ হামলা চালিয়ে চাবি নিয়ে যায় এবং সিসি ক্যামেরার ডিভিআর খুলে নিয়ে যায়।

লিমন তালুকদার বলেন, আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন ১৫ জন কর্মচারী নিয়ে পরিচালিত হয়। ঘটনার কয়েকদিন পরে তারা দোকানের চাবি দিয়ে গেছে। আরো কিছু জিনিস তারা দেয়নি। আমি একজন উদ্যোক্তা। জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কারপ্রাপ্ত। আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বর্তমানে বন্ধ হওয়ার পথে। আমি ও আমার পরিবার এখন চরম আতঙ্কে আছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম আহসান কবির বলেন, ঘটনাতো মিটমাট হয়ে গিয়েছে। আমার লোকজন ওই ছেলের দোকানের চাবি এনেছিল। ওরা ওদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমতা চেয়ে দোকানের চাবি নিয়ে গেছে
তিনি বলেন, আমড়াজুড়ি খেয়াঘাটের ইজারা মূল্য অনেক। তা কমানোর জন্য আমি সিদ্ধান্ত নেই দরপত্র কিনলেও কেউ জমা দেবে না। বাধ্য হয়ে সরকার কম মূল্যে দরপত্র ছাড়বে। তখন কিনে যে পাবে সে চালাবে। কিন্তু আমার কথা না শুনে এই ছেলে (লিমন তালুকদার) বেশি মূল্যে দরপত্র জমা দিয়েছে। আমি যেখানে লোকজনের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। সে কথা না শোনায় দলীয় কিছু লোক ক্ষিপ্ত হয়ে ওর দোকানের চাবি নিয়ে এসেছিল। তাতো ফেরত দিয়ে এসেছে।

বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, এই ছেলে বিএনপি করে। ওর মামা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের আমলেও সে ঘাট পেয়েছে। তার মানে বোঝেন সে কেমন ছেলে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর নেতাকর্মীদের নিয়ে আমড়াজুড়ি ও সোনাকুর খেয়াঘাট দখলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে। অধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে নিজ দলীয় অনেক কর্মীকে এলাকা ছাড়া করেছেন বলেও জানা গেছে।

‎কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান হোসেন বলেন, এই ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।