কনডেম সেল নিয়ে হাইকোর্টের রায় ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির আসামিকে কনডেম সেল বা নির্জন কারাকক্ষে রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। মঙ্গলবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ ‘চূড়ান্ত হওয়ার আগে’ কোনো ফাঁসির আসামিকে কারাগারে ‘কনডেম সেলে’ রাখা অবৈধ ও বেআইনি বলে ১৩ মে রায় দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগ এবং রিভিউয়ের পরও বহাল থাকলে এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদনও নাকচ হয়ে গেলে তখনই তার ‘মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত’ হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।
২০২১ সালে বিভিন্ন কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি থাকা তিন কয়েদির করা রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। তিন রিটকারী হলেন, সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও খাগড়াছড়ির শাহ আলম।
বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তাদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) হাইকোর্টে বিচারাধীন। রায়ে জেলকোড ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়। রায়ে মৃত্যদণ্ডাদেশ ‘চূড়ান্ত হওয়ার আগেই’ যাদের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে, তাদের আগামী দুই বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সাধারণ সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয় কারা কর্তৃপক্ষকে।
কারা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ১ মে পর্যন্ত দেশের ৬৮টি কারাগারে বিশেষ সেলে ২ হাজার ৫১৫ ফাঁসির আসামি বন্দি আছেন। এর মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৪২৯ জন। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত যে ৮৬ নারী রয়েছেন, তাদের সংখ্যাটাও কারা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আড়াই হাজারের বেশি এসব আসামির মধ্যে হাইকোর্টে বিচার নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছেন ১ হাজার ১৯৫ জন। আর সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হবে ১ হাজার ৩২০ জনের আপিল।হাইকোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধিতে কোনো আসামিকে নির্জন কারাবাসে রাখা যাবে, তবে তা ৩০ দিনের বেশি নয়। এর মধ্যে টানা ১৪ দিন এবং মাসে ৭ দিনের বেশি নয়। কাজেই মৃত্যুদণ্ডের রায়ে পর কনডেম সেলে রাখা হলে তা হবে দুইবার সাজার সমতুল্য।