কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যে পুলিশ সুপারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ৯:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগে দেড় কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার (৫ জুলাই) মাদারীপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৬১/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল মো. নুরুজ্জামান সুমন, জাহিদুল ইসলাম, মাদারীপুর জেলা পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পিয়াস বালা, সাবেক টিএসআই গোলাম রহমান এবং মাদারীপুরের বাসিন্দা মো. হায়দার ফরাজী। আজ বুধবার সন্ধ্যায় নিউজ পোস্ট বিডিটি এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৯ হাজার ৬৮০ জন নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ২৮ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই নিয়োগের মধ্যে ছয় হাজার ৮০০ জন পুরুষ এবং দুই হাজার ৮৮০ জন নারী ছিলেন। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা রেঞ্জের অধীনে মাদারীপুর জেলায় সাধারণ পুরুষ ১৬ জন ও সাধারণ নারী তিনজন এবং বিশেষ কোটায় ১৫ জন পুরুষ ও ২০ জন নারীসহ মোট ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য গঠন করা হয় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি। যার সভাপতি ছিলেন মাদারীপুর জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার।নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপ হিসেবে ২০১৯ সালের ২২ জুন শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা হয়। এতে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৯৩ জন, যাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন ৩৬৪ জন। আর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে ওই বছরের ২৩ জুন লিখিত পরীক্ষা হয়। এরপর চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৪ জন কনস্টেবল নিয়োগের সুপারিশ করে নিয়োগ কমিটি। ওই নিয়োগ চলাকালে ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার অবৈধ ঘুস লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানায় ছয়টি জিডি করা হয়। বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে এবং আদালত কর্তৃক পরবর্তীতে দুদকে প্রেরণ করা হয়।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, দুদকের অনুসন্ধানকালে মাদারীপুর পুলিশ সুপার অফিস থেকে জব্দ করা ৩২টি লিখিত পরীক্ষার খাতা ও আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১৭ প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট এক কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঘুস গ্রহণ করেন আসামিরা। দুদকের অনুসন্ধানেও আসামিদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।