নিজস্ব প্রতিবেদক
দুপুর ১টা ৪০ মিনিট, গতকাল মঙ্গলবার। ঘটনাস্থল কমলাপুর রেলস্টেশন। ডিজিটাল বোর্ডের দিকে তাকিয়ে সময় দেখার অপেক্ষা। যাত্রীদের জানার চেষ্টা, রাজশাহীর পথে ২টা ৪৫ মিনিটের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়বে কয়টায়।
খোঁজ নিতে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে এলেন রুম্মান আহাম্মেদ। স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে জানা গেল, যে ট্রেনের ঢাকা থেকে রাজশাহীর পথে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেই ট্রেন রাজশাহী থেকে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে।
এ তো গেল এক সিল্কসিটির কথা। বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু দিয়ে ঢাকায় যুক্ত হওয়া সব ট্রেনই গতকাল দেরিতে ঢাকা ছেড়েছে। বেশির ভাগ ট্রেন তিন-চার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন সূত্র বলছে, ধূমকেতু ও নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়েছে চার ঘণ্টা দেরিতে। তিন ঘণ্টা দেরিতে ঢাকা ছেড়েছে একতা এক্সপ্রেস। রংপুর ২ ও বনলতা এক্সপ্রেস গন্তব্যের পথে রওনা দেয় দেড় ঘণ্টা পর।
জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ট্রেন দেরিতে আসায় দেরিতে ছাড়তে হচ্ছে। আমাদের এখান থেকে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।যমুনার ওই পারে লাইনের কারণে সমস্যা হচ্ছে। অন্যান্য জায়গার সঙ্গে ঢাকার ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।’
কমলাপুরে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা গতকাল বেশ কষ্টে সময় পার করেছে। রোজা রাখা যাত্রীদের ইফতার ও সাহরি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে কখন ট্রেন ছেড়বে, এর সুনির্দিষ্ট ধারণাও পায়নি তারা।চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী সবুজ রহমান বলেন, ‘ট্রেন আসতে নাকি আরো দুই ঘণ্টা লাগবে! এখন দুই ঘণ্টায়ও আসবে কি না, কে জানে! তাদের কথার কোনো ঠিক নেই। একেক সময় একেক কথা বলে।’
গতকাল দুপুর ১টা ১৭ মিনিটে স্টেশনে ডিজিটাল ডিসপ্লেতে ছয়টি ট্রেনের নামের তালিকা দেখা যাচ্ছিল। ট্রেনগুলো ১২টা ২০ মিনিট থেকে ২টা ৪০ মিনিটের মধ্যে কমলাপুর ছাড়ার কথা। কিন্তু তখনো পাঁচটি ট্রেন প্ল্যাটফরমে আসেইনি। পাঁচ ট্রেনের ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য সময়ও এতে উল্লেখ ছিল না।
ডিসপ্লের সামনে তখন সময়ের হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত অনেকে। তাদেরই একজন রুহুল আমীন। যাবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ। রাজশাহী কমিউটারের অপেক্ষা করছেন তিনি। এই ট্রেন ১২টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সম্ভাব্য সময়ের ঘরে বোর্ডে লেখা বিলম্ব হবে।
রুহুল আমীন বলেন, ‘ট্রেন কখন ছাড়বে, তার কোনো ঠিক নেই। আনুমানিক একটা সময়ের ধারণা পেলেও প্রস্তুতি নেওয়া যায়। তাই একটু পর পর ঘুরে এসে বোর্ডে দেখি, ছাড়ার কোনো সময় দিল কি না।’