করোনাভাইরাসে নতুন আতঙ্ক, আক্রান্ত হলেও লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে না
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান থেকে চারশ মাইল উত্তরে আনইয়াংয়ে ভ্রমণে যান ২০ বছর বয়সী এক চীনা তরুণী। সেখানে তার সঙ্গে পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন, কিন্তু তাদের কারোরই শরীরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি।
শুক্রবার চীনা বিজ্ঞানীরা বলেন, কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াই ভাইরাস বিস্তারের নতুন প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।-খবর রয়টার্সের
আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাময়িকীতে প্রকাশিত নতুন গবেষণা নিবন্ধে করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়াচ্ছে, তার যোগসূত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়া এই ভাইরাসের বিস্তাররোধ কেন কঠিন, সেই ব্যাখাও দেয়া হয়েছে তাতে।
ভ্যানডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. উইলিয়াম শ্যাফনার বলেন, বিজ্ঞানারা ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, অথচ অসুস্থতা বোধ করেননি, এমনটি ঘটেছে কিনা? জবাব এসেছে, হ্যাঁ।
কভিড-১৯ নামের এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে দুই হাজার ২৩৯ জন মারা গেছেন। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে অন্তত ২৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ।
ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াই লোকজনের শরীরে তা সংক্রমিত হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
শ্যাফনার বলেন, নতুন গবেষণায় যা দেখা গেছে, তা সাধারণ পরীক্ষাগারের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলে না। উহানেই আপনি এই ধরনের রোগী পাবেন। যেখানে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নেই, ভ্রমণের কারণে সেসব জায়গায়ও তা ছড়িয়ে পড়ছে।
অর্থাৎ লক্ষণ প্রকাশ না ঘটায় পরিবার ও আশপাশের লোকজনকে সহজেই আক্রান্ত করতে পারছেন একজন করোনাভাইরাস রোগী।
জানজু ইউনিভার্সিটি ও কলেজের পিপলস হাসপাতালের ডা. মেইউন ওয়াং বলেন, উহান থেকে এক নারী আনইয়াংয়ে গিয়েছিলেন গত ১০ জানুয়ারি। পরে স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন। যখন তারা অসুস্থতা অনুভব করতে শুরু করেন, চিকিৎসক তাদের আলাদা করে ফেলেন এবং তাকে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করেন।
প্রথম ওই নারীর শরীরে করোনাভাইরাস নেই বলেই দেখা গেছে। কিন্তু পরবর্তী পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস পজেটিভ প্রতিবেদন এসেছে।
তার পাঁচ আত্মীয়ের শরীরেও কভিড-১৯ নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে। কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই তরুণীর শরীরে করোনার কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি।
তার বক্ষে সিটি স্ক্যানে তাকে স্বাভাবিকই দেখা গেছে। তার কোনো জ্বর ছিল না। পেটে ব্যথা কিংবা শ্বাসপ্রশ্বাসঘটিত কোনো লক্ষণও দেখা যায়নি। ছিল না কোনো গলা ব্যথাও।
এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীদের দাবি, কভিড-১৯ ভাইরাসের প্রতিরোধ এতে কঠিন হয়ে পড়বে।