করোনা মহামারির মাঝেও অনিয়ম তদন্তে শুক্রবার নামছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

প্রকাশিত: ১১:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২১

‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন পরিবারগুলোকে উপহার দেওয়া ঘরগুলো পরিদর্শনে নামছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এই প্রকল্পের আওতায় দুই দফায় ১ লাখ ২৩ হাজার ঘর উপহার দেওয়া হয়। এরইমধ্যে ঘরগুলো ভেঙে পড়া, দেয়ালে ফাটল, ঘরগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে।

দুই শতাংশ খাস জমিসহ প্রদান করা দুই কক্ষবিশিষ্ট আধাপাকা বাড়ি নিয়ে অভিযোগ উঠে বিভিন্ন অনিয়ম ও অবহেলারও।


এরই পরিপ্রেক্ষিতে করোনা মহামারির কঠোর বিধিনিষেধের মাঝেও দেশব্যাপী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি পরিদর্শনে নামছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক টিম।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ভাগ করে পরিদর্শন শুরু করবে ৫টি টিম।

পরিদর্শনকারী টিমগুলোকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নির্মিত এবং নির্মাণাধীন বাড়িগুলোর নির্মাণশৈলী ও গুণগতমান অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উচ্চপর্যায়ের ৫টি টিমের একটিতে নেতৃত্ব দেবেন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন নিজেই।

ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নির্মিত ঘরগুলো পরিদর্শন করবে এসব টিম।

যেকোনও পরিস্থিতিতে এই পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রতিটি কেসই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রতিটি বাড়ির সঙ্গে একেকটি পরিবারের স্বপ্ন জড়িত। এজন্যই এ রকম একটি মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিদর্শনে নামছি।’

মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর সর্ববৃহৎ মানবিক প্রকল্প। এ প্রকল্পের অনিয়ম বা গাফিলতি নিয়ে আমাদের অবস্থান শুরু থেকেই জিরো টলারেন্স। ইতোমধ্যে যেসব জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে, সেসব জায়গায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। একইসঙ্গে আমরা যেসব বাড়ি নির্মাণ নীতিমালা অনুযায়ী তৈরি হয়নি, সেসব বাড়ি সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণে যা যা প্রয়োজন, সবকিছু করে দেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক জায়গায় অতিবৃষ্টি, বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছু কিছু জায়গায় বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা সেসব জায়গায় পুনরায় বাড়ি নির্মাণ অথবা সংস্কার করে দিচ্ছি। তবে এই মানবিক প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্টকে বিতর্কিত করতে একটি সংঘবদ্ধ মহল অপপ্রচারে লিপ্ত আছে, যেটি কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যা‌লয়ের ওপর আস্থা রাখুন। ভূমিহীন-গৃহহীন সবাইকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্লোগান হলো—‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এর সঙ্গে আমাদের সবার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনও ধরনের অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি পেতেই হবে। কাউকেই বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।’

‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং জমি আছে ঘর নেই, অথবা অত্যন্ত জরাজীর্ণ ঘর—এ রকম ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে বাড়ি নির্মাণ করে দেবে সরকার।