কলাবাগানে নিহত গৃহকর্মীর পরিচয় মিলেছে: গৃহকর্ত্রীকে ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ

প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২৩

আমিনুল ইসলাম বাবু:

রাজধানীর কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডে একটি বাসায় নির্যাতনে নিহত গৃহকর্মীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম হেনা (১০)। বাবার নাম হক মিয়া। হেনার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায়। তার বাবা ও মা দুজনই মারা গেছেন। আজ সোমবার (২৮ আগস্ট) বিষয়টি নিউজ পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও গৃহকত্রী সাথীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে হেনার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার বয়স ১০ বছর। বাবা ও মা মারা গেছেন। এতিম হেনাকে তিন বছর আগে ঢাকায় নিয়ে আসেন গৃহকত্রী সাথী।

ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মৃত হেনার মামা চাচাদের ডাকা হয়েছে। হেনার স্বজনরা ঢাকায় এসেছেন। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, নির্যাতনে গৃহকর্মী হেনা হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকত্রীর অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে।

কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ই-১ এর বাসিন্দা সাথী আক্তার পারভীন তার শিশু সন্তান আর ওই গৃহকর্মী হেনাকে নিয়ে বসবাস করতেন। গত তিন বছর ধরে নিহত গৃহকর্মী হেনা ওই বাসায় কাজ করছিল। কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ওই বাসায় প্রায়ই হেনাকে নির্যাতন করা হতো বলে ধারণা পুলিশের। গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালেও হেনাকে নির্যাতন করা হয়। শিশুটি মারা যাওয়ার পর লাপাত্তা গৃহকত্রী সাথী।

কলাবাগান থানা পুলিশ বলছে, গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ফোনে গৃহকর্মী হেনার মৃত্যুর প্রাথমিক তথ্য পায় তারা। এরপর রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানাধীন সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর ভবনে গিয়ে বেশকটি বাসায় খোঁজও নেয় পুলিশ। ওই ভবনটিতে ৪৪টি ফ্ল্যাট। মধ্যরাতে সব ফ্ল্যাটে খোঁজ নেওয়া বেগতিক বুঝে ফিরে আসে পুলিশ। পরদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি মালিক সোসাইটির লোকজন নিয়ে ভবনটির দ্বিতীয় তলা ই-১ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে গৃহকর্মী হেনার মরদেহ উদ্ধার করে তারা। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর গত শনিবার (২৬ আগস্ট) সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহালে পুলিশ দেখতে পায়, শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখে ফেনা এবং শরীর ফুলে গেছে হেনার। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারের ৩৬ ঘণ্টা পর নির্যাতনে শিশু গৃহকর্মী হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলাটির বাদী এসআই বাবুল হোসেন। মামলার আসামি সাথী আক্তার পারভীন (ডলি) ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে পুলিশ।