নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় একটি সড়কের সংস্কারকাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছেন। এতে মদন ছাড়াও আটপাড়া ও মোহনগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। উপজেলার ফচিকা গ্রাম থেকে ১ হাজার ৪১০ মিটার সড়কটির সংস্কারকাজ করা হচ্ছে।
এলজিইডির মদন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটিতে খানাখন্দ থাকায় তিন উপজেলার বাসিন্দারা অনেকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। এ সড়কের গুরুত্ব অনুধাবন করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। খানাখন্দ সংস্কার করে নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ কোটি ২ লাখ টাকা।
দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় কেন্দুয়ার মেসার্স মামুন ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে তারা কাজ শুরু করে। তবে খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারের লোকজন কাজ ফেলে চলে যান। গত ১৩ এপ্রিল কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। সে সময়সীমা শেষ হওয়ার পর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বাকি কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সড়কটির সংস্কারকাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় যাতায়াতে দুর্ভোগ বেড়েছে এলাকার বাসিন্দাদের। ফচিকা মহিম স্মরণিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নির্মল বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাজটি বন্ধ থাকায় তিন উপজেলার লোকজনের চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে। সংস্কারকাজ শুরুর আগে সড়ক দিয়ে চলাচল করা যেত। কিন্তু এখন দুর্ভোগ বেড়েছে। দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
গতকাল সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের নামে পুরোনো সড়কটি খুঁড়ে কেবল খোয়া ফেলে রেখে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় খোয়া সরে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় এসব গর্তে পানি জমে আছে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মামুন বলেন, প্রকল্পের অর্থায়নে সমস্যা ছিল। আবহাওয়া ভালো ছিল না। সে কারণে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে দাবি তাঁর।
উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, চুক্তি অনুযায়ী গত এপ্রিল মাসে এ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারের কোনো খোঁজ নেই। মোবাইল ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে কাছে গত ৯ অক্টোবর ঠিকাদারের চুক্তি বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। চুক্তি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র দিয়ে কাজটি শেষ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।