ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
নান্দাইল উপজেলায় প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন কালীগঞ্জ বাজার-তাড়াইল সড়কের প্যালাসাইডিং ব্লক ফাটল ধরে ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের কাজ করার কারণেই এমন হয়েছে। তবে তদারকি অফিস বলছে, কাজের বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি।
রাজগাতী ইউনিয়নের একটি প্রসিদ্ধ ব্যবসাকেন্দ্র কালীগঞ্জ বাজার। সেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি ব্যাংক। সেখান থেকে সড়ক পথে পাশের জেলা কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা যায়। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের মুশুলী বাসস্ট্যান্ড থেকে কালীগঞ্জ বাজার হয়ে একটি পাকা সড়ক তাড়াইল উপজেলার কিশোরগঞ্জ-তাড়াইল সড়কে মিলেছে। গত বছর প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। মুশুলী বাসস্ট্যান্ড থেকে কালীগঞ্জ বাজার এবং কালীগঞ্জ বাজার থেকে তাড়াইল সড়ক পর্যন্ত দুই ভাগে কাজ শুরু হয়। প্রথম অংশের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর শেষ অংশের ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। শেষ অংশের কাজ পায় ভাটিবাংলা কনস্ট্রাকশন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কালীগঞ্জ বাজারটি নরসুন্দা নদীর উত্তর পাড়ে। সড়কটি প্রশস্ত করতে গিয়ে নদীর বেশ কিছু অংশ প্যালাসাইডিং করতে হয়েছে। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই প্যালাসাইডিংয়ের ব্লকে অসংখ্য ফাটল ধরে ধসে পড়েছে। এ কারণে নতুন সড়কটি এখন হুমকির মুখে রয়েছে।
গতকাল বুধবার কালীগঞ্জ বাজারের পূর্ব পাশে বর্মণপাড়ার কাছে গিয়ে দেখা যায়, প্যালাসাইডিং করা প্রায় পুরো অংশে ফাটল ধরেছে। অন্যদিকে সড়কের পাশের অংশের অনেকটাই ধসে গেছে। ধসে পড়া অংশে বালুভর্তি বস্তা ফেলে কোনো মতে সড়কটি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রথম ফাটল দেখা দিলে ঠিকাদারের লোকজন দুইবার সিমেন্ট দিয়ে ফাটল আড়াল করার চেষ্টা করে। তারপরও বৃষ্টির কারণে পুরো অংশটি ধসে পড়া থেকে রক্ষা করতে পারেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মন্নাছ বলেন, নদী থেকে বালু তুলে পাড়ে দিয়ে তার ওপর ব্লক বসানো হয়েছে। ব্লক যে এতদিন থেকেছে, সেটাই বেশি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাটিবাংলা কনস্ট্রাকশন এন্টারপ্রাইজের মালিক মোর্শেদ ফকিরের ভাষ্য, কাজের কোনো ত্রুটি হয়নি। ব্লকের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ফাটল ধরে কিছু অংশ ধসে পড়েছে। নদীর পানি শুকালে পুনরায় মাটি ভরাট করে ব্লক বসানো হবে।
নান্দাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ জানান, ওই কাজের পুরো বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি। ঠিকাদারকে ওই অংশের প্যালাসাইডিং পুনরায় করে দিতে বলা হয়েছে।