কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু, চাঁদার কারণে নামেননি অনেক জেলে
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
রাঙামাটি প্রতিনিধি:
চার মাস সাত দিন পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নামেন জেলেরা। ৭২৫ বর্গকিলোমিটারের হ্রদের বুক জুড়ে বসে জাল, জেলে ও নৌকার মেলা। তবে এবার কাপ্তাই হ্রদে পানি বেশি থাকা এবং আঞ্চলিক দলের চাঁদার কারণে হ্রদের একটি অংশে জেলেরা না নামায় প্রথম দিনে প্রত্যাশিত মাছ আহরণ হয়নি।
রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকেই জেলেদের আহরণকৃত মাছ বোটে করে নিয়ে আসা হয় জেলার সর্ববৃহৎ অবতরণ কেন্দ্র ফিশারি ঘাটে। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে ঘাটটি।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জেলেদের মাঝে আশঙ্কা থাকায় প্রথম দিনে মাছের অবতরণ কম। তবে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় বছরব্যাপী মাছ পাওয়ার আশা করছি আমরা।
কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শুক্কুর বলেন, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদ পানিতে পরিপূর্ণ। এ কারণে মাছ একটু কম ধরা পড়ছে। তবে আমরাও চাই আপাতত মাছ কম ধরা পড়ুক, তাতে আমরা বাজারটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো। পাশাপাশি মাছ নষ্ট হওয়ারও সম্ভাবনা থাকবে না।
জেলার মনসুর মিয়া বলেন, দীর্ঘ চারমাস পর লেকে জাল ফেললাম। প্রথম জালে মলা, চাপিলা এবং কেচকি মাছ উঠেছে। এতদিনের বিরতি শেষে আবারো কাজে ফিরতে পেরে ভালো লাগছে। আগামী ৯ মাস আমরা লেকে মাছ ধরতে পারবো।
এদিকে কাপ্তাই উপজেলায় জেলেদের মাছ ধরায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) বিরুদ্ধে। রোববার সকালে কাপ্তাই উপজেলা মৎস্য করপোরেশন ঘাটে কোনো মাছের নৌকা আসেনি বলে জানা গেছে। চাঁদা আদায় করতে না পেরে পিসিজেএসএস সদস্যরা মাছ ধরতে নিষেধ করেছেন বলে অভিযোগ মৎস্য ব্যবসায়ীদের।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী বলছেন, প্রতি বছর সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে হ্রদ থেকে মাছ আহরণ করতে হয়। এ বছর অতিরিক্ত চাঁদা দাবি করায় তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে জেলেদের মাছ ধরতে দিচ্ছে না অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।
কার্প জাতীয় মাছের বংশবিস্তারের লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাসের জন্য পহেলা মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ থাকে। তবে এ বছর কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানির অভাবে মাছের বংশবিস্তার সুষ্ঠুভাবে না হওয়ায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ দুইদফা বাড়ানো হয়। এতে চার মাস সাত দিন পর হ্রদে মাছ আহরণে নামেন জেলেরা।