কিশোরগঞ্জে কাজ করার সময় বিদ্যুৎ সংযোগ, মৃত্যুর পর তারে ঝুলে ছিলেন লাইনম্যান

প্রকাশিত: ১১:৫২ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২৩

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মাটি থেকে প্রায় ৩৫ ফুট উঁচু খুঁটিতে পল্লী বিদ্যুতের লাইনে কাজ করছিলেন হাদী মিয়া। কার করার সময় হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়। আর মৃত্যুর পর তার লাশ ঝুলে ছিল বিদ্যুতের তারে।

খবর পেয়ে ওই খুঁটি সংলগ্ন তার থেকে হাদী মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে হোসেনপুর থানার পাশের মডেল মসজিদ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হাদী মিয়া (২০) পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার চরশাখচূড়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি হোসেনপুর পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ ঘটনায় এজিএমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের (জিএম) জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী জুলফিকার।

তিনি জানান, নিহত লাইনম্যান পল্লী বিদ্যুৎ নিয়োগকৃত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। সে হিসেবে পল্লী বিদ্যুতেরই লোক বলা যায়। তারা সিডিউল অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে থাকেন। আজকের এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার ব্যত্যয় ঘটেছে কি-না এবং কারও অবহেলার জন্য ঘটেছে কি-না; তা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

দুটি বিদ্যুৎ লাইনের অবস্থান এক সঙ্গে বলা যায়, আর এমন বিদ্যুৎ লাইনের একটিতে কাজের সময় অন্য একটি লাইন কী করে হঠাৎ চালু হয়ে গেল- এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম প্রকৌশলী জুলফিকার বলেন, এ সবের কারণও তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারী জানান, লাইনম্যান হাদী মিয়া বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করেই কাজ করছিলেন। হঠাৎ একটি লাইন চালু হয়ে গেলে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি। মাটি থেকে প্রায় ৩৫ ফুট উঁচু খুঁটিতে ঝুলছিল হাদী মিয়ার মরদেহ। পরে স্থানীয়রা হোসেনপুর ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।

তিনি জানান, হোসেনপুর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালায়। কিন্তু তাদের বড় লেডার না থাকায় উপরে উঠতে পারছিল না। পরে তারা কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। মরদেহটি হোসেনপুর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান টিটু জানান, ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে লাইনম্যান হাদী মিয়ার মরদেহ গ্রহণের পর ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।