কুমিল্লায় মৃত ঘোষণা করার আড়াই ঘণ্টা পর কেঁদে উঠল নবজাতক!

প্রকাশিত: ১:৩২ পূর্বাহ্ণ, মে ৩০, ২০২৩

কুমিল্লার চান্দিনায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে ওই নবজাতকে ওষুধের কার্টুনে করে বাড়ি নিয়ে যান স্বজনরা।

তাকে দাফনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হঠাৎ কেঁদে উঠায় আত্মীয়-স্বজনরা ওই নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়ঝাপ শুরু করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সোমবার (২৯ মে) চান্দিনা উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুৎ রোড এলাকার ‘চান্দিনা সেন্ট্রাল হাসপাতালে’ ওই নবজাতকের জন্ম হয়।

মাতৃগর্ভেই মৃত্যু হয় এমন সিদ্ধান্তে হাসপাতালের সেবিকারা ওষুধের কার্টুনে করে দিয়ে দেন সদ্যোজাত শিশুটিকে। মৃত ওই নবজাতককে বাড়িতে নিয়ে কার্টুন খুলে মাটিতে রাখার পর নড়েচড়ে উঠতে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই নবজাতক প্রস্রাব ও মলত্যাগ করে চিৎকার করে উঠলে বাড়ির লোকজন তাকে কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক আবারও শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

বুড়িচং উপজেলার আবিদপুর গ্রামের প্রবাসী জালালের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তারের (১৯) ঘরে এই শিশুটির জন্ম হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় সুমাইয়াকে চান্দিনা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিলে সকাল সাড়ে ৮টায় সিজারিয়ান অপারেশনে তার ছেলে শিশুর জন্ম হয়। ওই সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

প্রসূতি সুমাইয়ার বড় বোন জরিনা আক্তার জানান, আমার বোনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর পরীক্ষা করে তারা বলছে দ্রুত সিজার করতে হবে। অপারেশনের পর ডাক্তার বাচ্চাটিকে কয়েকটি ঝাঁকি দিয়ে বলেন, বাচ্চা মারা গেছে। পরবর্তীতে হাসপাতালের স্টাফরা একটি ওষুধের কার্টুনে করে দিয়ে দেন শিশুটিকে। শিশুটি জন্মের পর কাটা নাভিতে পর্যন্ত বাঁধ দেয়নি কেউ। সম্পূর্ণ অবহেলা ও অনভিজ্ঞতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সুমাইয়ার বাবা আব্দুল বারেক জানান, নাতির মৃত্যুর কথা শুনে আমি জানাজা দিতে আবিদপুর যাই। বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ ওই শিশুটির নড়েচড়ে উঠে। এ অবস্থা দেখে আমরা কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর আবারও শিশুটি চিৎকার করে ওঠে। মলমূত্র ত্যাগ করায় আমরা তাকে কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক আবারও শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিজারিয়ান ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, মূলত নবজাতক জন্মের এক মিনিটের মধ্যে নড়াচড়া বা চিৎকার না করলে ডাক্তারি ভাষায় তাকে মৃত বলা হয়। ওই শিশুটির ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে। পরবর্তীতে কিছু ঘটে থাকলে তা চিকিৎসাবিদ্যা সমর্থন করে না।

এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।