‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যে চবি প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫

সানজিদা মাহবুবা:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ও প্রক্টরের ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বহিষ্কারাদেশকে ‘একপাক্ষিক’ সিদ্ধান্ত দাবি করে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভির মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা মন্তব্যকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেন।

মানববন্ধনে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরোজ তৃণা বলেন, ‘আমি ওই হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। যেখানে প্রক্টরের দায়িত্ব ছিল আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেখানে তিনি বিশৃঙ্খলাকে উসকে দিয়েছেন। রাত ১২টায় একদল শিক্ষার্থী কীভাবে মেয়েদের হলের সামনে গিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়? অথচ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের হলের মেয়েদেরই বহিষ্কার করেছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আল মাশনূন বলেন, ‘এই প্রশাসন একপক্ষীয় বিচার করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা যারা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, তাদেরকে হানিট্র্যাপ বলে অপমান করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, তারা যেন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চায়। অন্যথায়, আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

তিহাস বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব বলেন, ‘নিরাপত্তার দাবি তোলার কারণে শিক্ষার্থীদের দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এটি চরম অন্যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবের প্রকাশ। আমরা তাদের এ ধরনের আচরণকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, তারা প্রশাসনের কাছে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য সময় দিচ্ছেন। যদি প্রশাসন দ্রুত এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে, তাহলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করা নিয়ে প্রথমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সহকারী প্রক্টরের গায়ে হাত তোলেন শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমি। শিক্ষার্থীরা ওই হলের ছাত্রীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও করেছিলেন। পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করতে যাওয়া ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছিল। পরে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।