কোদলা নদীতে এক ইঞ্চিও উদ্ধার করেনি বিজিবি, দাবি বিএসএফের

প্রকাশিত: ১২:১৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২৫


নিজেস্ব প্রতিবেদক:

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কোদলা নদীতে ৫ কিলোমিটার লম্বা ভূখণ্ড ভারতের দখল থেকে উদ্ধার করেছে বলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) যে দাবি করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। বিএসএফ বলছে, এখানে এক ইঞ্চি ভূখণ্ডও কেউ দখল করেনি।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর ভারতের অন্তর্গত ৫ কিলোমিটার জমির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এমন প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএসএফ।

এক বিবৃতিতে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার বলেছে, বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের একটি অংশে প্রকাশিত এই ধরনের প্রতিবেদনে সত্য ও যোগ্যতার অভাব রয়েছে।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা ব্লকের রাংঘাট গ্রামের ভারতের দিকের এলাকাটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সেখানে কোদালিয়া নদী বরাবর আন্তর্জাতিক সীমানা (আইবি) রয়েছে এবং ওই নদীর উভয় পাশে রেফারেন্স পিলারের মাধ্যমে সেটি ভালোভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানকার আন্তর্জাতিক সীমানা এবং বিএসএফের ডিউটি ​​প্যাটার্ন কয়েক দশক ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিজিবি সদস্যরা গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর থেকে মোটরচালিত নৌকা এবং এটিভি ব্যবহার করে ওই এলাকায় ২৪ ঘণ্টা টহল দিচ্ছে বলে যে দাবি সামনে এসেছে, বিএসএফের বিবৃতিতে সেটিও অস্বীকার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এই প্রতিবেদনগুলো ‘মনগড়া গল্প’ ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএসএফ এবং বিজিবি নদীর নিজ নিজ তীরে তাদের দায়িত্ব পালন করে চলেছে, যা আন্তর্জাতিক সীমানা (আইবি) হিসাবে কাজ করে।

সম্প্রতি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতের দখলে থাকা কোদালিয়া নদীর পাঁচ কিলোমিটার জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করে বিজিবি। স্বাধীনতার পর থেকেই কোদলা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের ওই অংশ ভারতের বিএসএফ দখল করে সেখানে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৫৮ বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোদালিয়া নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর হতে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে। ১৯৬১ সালে প্রণীত বাংলাদেশ-ভারত (স্টিপ ম্যাপ সিট নম্বর-৫১) মানচিত্র অনুসারে কোদলা নদীর উল্লিখিত ৪.৮ কিলোমিটার নদী সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার অভ্যন্তরে অবস্থিত।

বিজ্ঞপ্তি থেকে আরও জানা যায়, সম্প্রতি কোদালিয়া নদীর প্রকৃত মালিকানা-সংক্রান্ত এই বিষয়টি ৫৮ বিজিবির নজরে আসে। এরপর বিজিবি প্রথমে বিভিন্ন নথিপত্র স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীটির প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করে বিএসএফের অবৈধ আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। পরে ৫৮ বিজিবির সদস্যরা সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোদালিয়া নদী নিজেদের আয়ত্বে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে বিজিবি সদস্যরা প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার জন্য যন্ত্রচালিত বোট এবং নদীর পাড়ে দ্রুত টহলের জন্য অল টেরেইন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করা হয়েছে।