ক্রীড়া ডেস্ক:
বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনের আলোচিত নাম হয়ে থাকলেন স্যাম কনস্টাস। ভারতের বিপক্ষে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের চতুর্থ ম্যাচের জন্য ১৯ বছরের এই তরুণ ব্যাটারকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল মেলবোর্নে। আর তাতেই বাজিমাত। মেলবোর্নে অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে ৬৫ বলে ৬০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেললেন। এদিন অন্য কারণেও আলোচনায় অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটার। তরুণ এই ক্রিকেটারকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছে কোহলির বিরুদ্ধে। সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটার। তবে কনস্টাস তা পাত্তা দিতে চাইলেন না। অভিষেক টেস্টে মাঠে যেরকম পরিণত ইনিংস খেললেন, মাঠের বাইরেও যে তিনি একই রকম পরিণত, সেটাও বুঝিয়ে দিলেন।
প্রথম সেশনের খেলা শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন কনস্টাস। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘কোহলি আপনার প্রিয় ক্রিকেটার। হঠাৎই মাঠের মাঝে ঝগড়া লাগল। আপনাকে ও ধাক্কা দিল। কী বলেছিল তখন? কনস্টাস উত্তর দেন, ‘মনে হয় আমরা দু’জনেই তখন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। আমি ঠিক বুঝতে পারিনি ঘটনাটা। নিজের গ্লাভস ঠিক করছিলাম। তার পরেই কাঁধে ধাক্কা খেলাম। তবে এ রকম হতেই পারে। এটাই ক্রিকেট। মাঠের লড়াই মাঠেই থাকুক।’
ঘটনাটি ঘটেছে ১০ ওভারের পর। মোহাম্মদ সিরাজ সেই ওভার শেষ করার পর দিক পরিবর্তন করার জন্য হেঁটে আসছিলেন কোহলি। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন কনস্টাসও। দু’জনের কাঁধে ধাক্কাধাক্কি হয়। কনস্টাস কিছু একটা বলে বসেন। কোহলিও এগিয়ে যান। দুজনের বিবাদ থামান আম্পায়ার এবং আরেক অজি ওপেনার উসমান খাজা।
রিপ্লেতে দেখা যায়, কনস্টাস মাথা নিচু করে ব্যাট হাতে যাচ্ছিলেন। কোহলিই পাশ থেকে অনেকটা দিক পরিবর্তন করে কনস্টাসের কাছে গিয়ে তাঁকে গিয়ে ধাক্কা মারেন। ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন বলছিলেন, কনস্টাসকে উত্তেজিত করার জন্যই এ কাজ করেছেন কোহলি। তবে এই কাজের জন্য কোহলি কখনোই গর্ব অনুভব করবেন এমন মনে করেন না সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক, ‘কোহলি ওই মুহূর্তের কথা মনে করে গর্ব অনুভব করবে না। কনস্টাস স্রেফ হেঁটে যাচ্ছিল। কোহলিকে দেখুন, সে তার পথের দিক পাল্টেছে।’
খুশি হতে পারেননি ভারতীয় গ্রেট সুনীল গাভাস্কারও। তার মতে দুজনেরই শাস্তির সম্ভাবনা আছে, ‘সরে গেলে কেউ ছোট হয়ে যেত না। প্রথমে মনে হয়েছিল যে, দুজনেই নিচে তাকিয়ে ছিল। এখন দেখার বিষয়, কাকে বেশি জরিমানা দিতে হয়।’
তবে সবচেয়ে বেশি চটেছেন রিকি পন্টিং। ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে বলেছেন, ‘বেশ কিছু অ্যাঙ্গেল থেকে আমরা ঘটনাটি দেখেছি। আমাকে বলতেই হচ্ছে, ওই পর্যায়ে ভারতের ফিল্ডারদের কোনো অবস্থাতেই ব্যাটসম্যানের ধারেকাছে যাওয়ার কথা নয়। ব্যাটসম্যানরা কোথায় একসঙ্গে দাঁড়ায় সেটা প্রতিটি ফিল্ডারই জানে। আমার কাছে মনে হয়েছে, কনস্টাস অনেক দেরিতে খেয়াল করেছে। কেউ তার সামনে থাকতে পারে সম্ভবত তার ভাবনায় ছিল না। কিন্তু স্ক্রিনে যাকে দেখা যাচ্ছে (কোহলি) বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হতে পারে।’
মেলবোর্নে এদিন ৬০ রান করে আউট হন কনস্টাস। তবে অভিষেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করে মন জয় করেছেন ক্রিকেট ভক্ত-সমালোচকদের। যেভাবে খেলেছেন সেটাই আলোচনার খোরাক। জাসপ্রিত বুমরাহর মতো সময়ের সেরা ফাস্ট বোলারকে রিভার্স সুইপে ছক্কা হজম করিয়েছেন। আবার স্কুপ করে বাউন্ডারিও হাঁকিয়েছেন। আর তার ছক্কাটাও আলাদা করেই আলাপের মতো।