খালেদা কীভাবে বিদেশে যেতে পারেন, সেই ‘উপায়’ বললেন আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২১

দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার ‍সুযোগ দেখছেন না আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন মঞ্জুর করে সরকার তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে মুক্তি দিয়েছে। সেখানে বিদেশে না যাওয়ার শর্ত রয়েছে। এখন তা বদলানোর সুযোগ নেই।

“কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিতে হলে সেটা আইনের মাধ্যমেই করতে হবে, অন্যভাবে কারো..। এক্ষেত্রে একটা উপায় আছে, তারা মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমা চাইতে পারে বা ৪০১ ধারায় সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন।

“ক্ষমা চাইলে উনারা বিবেচনা করলে ক্ষমা করতে পারেন। আর সেই ক্ষমা চাইতে গেলে অবশ্যই দোষ স্বীকার করে চাইতে হবে।”

৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়; শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে তিনি গুলশানের বাসাতেই ছিলেন।

গত ১৪ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ২৭ এপ্রিল বসুন্ধরার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা।

এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চেয়েছিল তার পরিবার। কিন্তু খালেদা সরকারের নির্বাহী আদেশে বিশেষ শর্তে মুক্ত থাকায় তার বিদেশে যাওয়ার ‘আইনি সুযোগ নেই’ বলে সরকার জানিয়ে দেয়।

বুধবার সংসদ অধিবেশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট পাসের আলোচনায় বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদ ও মোশাররফ হোসেন ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর দাবি তোলেন।

পরে সে প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, “উনার পরিবারের সদস্যরা দরখাস্ত করলেন। উনারা দরখাস্তে বলেছিলেন উনাকে বিদেশ নিয়ে যেতে হবে। তাদের আবেদনে আইনের ধারার কথা উল্লেখ ছিল না। ওই আবেদনকে আমরা ৪০১ হিসেবে ট্রিট করে দুটো শর্ত দিয়ে তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে মুক্তি দিয়েছি।

“শর্ত দুটি হচ্ছে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং তিনি দেশে থেকে চিকিৎসা নেবেন। তারা (খালেদা জিয়ার পরিবার) এটা গ্রহণ করেছিলেন। গ্রহণ করে তারা বেগম জিয়াকে জেলখানা থেকে বাসায় নিয়ে যায়।”

বিএনপির নেতারা ‘কথায় কথায় বিদেশ পাঠানোর কথা বলেন’ মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, “একটি দরখাস্ত যখন নিষ্পত্তি হয়ে যায়, সেটা কী আবার পুর্নবিবেচনা করা যায়? উনারা তো দরখাস্ত করে শর্ত মেনে মুক্ত করে এনেছেন। তারপর এখন বলছেন বিদেশে যেতে হবে। আবার দরখাস্ত করলেন। এটা কী রকম কথা!

“ওই দরখাস্ত তো শেষ (নিষ্পত্তি)। সেটার ওপর তো আর কেউ কিছু করতে পারবে না। ৪০১ এর যে দরখাস্ত হিসেবে সেটা নিষ্পন্ন হয়ে গেছে। ওটা তো মঞ্জুর হয়েছে।”

মন্ত্রী চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “আইনে ৬টি সাব-সেকশন আছে। এর মধ্যে কোথাও যদি দেখাতে পারেন আবার দরখাস্ত করতে পারবেন, আবার পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন, তাহলে আমি আইন পেশায় থাকব না।”

সংসদে বক্তৃতা দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে খালেদাকে মুক্ত করার সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপি নেতাদের আইন পড়ে দেখার পরামর্শ দেন আনিসুল হক।

তিনি বলেন, “উনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তো চিকিৎসা পাননি কোথায়? … উনারা এমন নজির দেখাতে পারবেন না যে আমরা বাধাগ্রস্ত করেছি। তাহলে চিকিৎসা পাননি এই কথা বলেন কেন? নিরর্থক পলিটিক্যাল স্ট্যান্টবাজি করলে তো হবে না।”