খুলনায় নারী গ্রেফতারের সঙ্গে তার প্রবাসী ছেলের স্ট্যাটাসের কোনো সম্পর্ক নেই: আইজিপি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
এসএম দেলোয়ার হোসেন:
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, খুলনার খালিশপুর থানা এলাকা থেকে এক নারীকে গ্রেফতারের সঙ্গে তার প্রবাসী ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাসের কোনো সম্পর্ক নেই। নাশকতামূলক কার্যকলাপের একটি বৈঠকে অংশ নেওয়ায় তথ্য প্রমানের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন হবিগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত পুলিশের ওসি অজয় চন্দ্র দেবকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক প্রবাসীর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে খুলনায় তার মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, বিষয়টি আমি পরিষ্কার করতে চাই। খুলনায় জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের বাসায় নাশকতা এবং আইনশৃঙ্খলা অবনতির ঘটানোর ষড়যন্ত্র চলছিল। সেখানে গোপন বৈঠকে অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। সে তথ্য পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং অভিযান পরিচালনা করি। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে পালিয়ে যান। পরে আমরা সেখান থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছি। আমাদের জানা ছিল না এ তিনজন কে বা কারা। আমরা যাদের গ্রেফতার করেছি তাদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ।
পুলিশ প্রধান বলেন, ওই নারীকে গ্রেফতারের পর আমরা জানতে পারি তার প্রবাসী ছেলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তাই ওই নারীকে গ্রেফতারের সঙ্গে তার ছেলের দেওয়া স্ট্যাটাসের সম্পর্ক নেই। ওই নারীকে গ্রেফতারের সময় সেখান থেকে আমরা কিছু ডিজিটাল ডিভাইস পেয়েছি, নাশকতার পরিকল্পনার আলামত পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় এ সংক্রান্ত তথ্য উঠে এসেছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল, অভিযানের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না বলেও জানান আইজিপি।
সম্প্রতি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, পুলিশ পুরাতন অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে নেতাকর্মীদের ফাঁসিয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, এমন দাবি সঠিক নয়। আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি, তাদের হেফাজত থেকে যেসব অস্ত্র পাওয়া গেছে সেগুলো উদ্ধার দেখিয়েই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিএনপি নেতাদের এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগামী দিনে আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণে বাংলাদেশ পুলিশের যেকোনো সদস্য আক্রান্ত হলে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা আইন ও বিধির আলোকে দায়িত্ব পালন করে থাকি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে দায়িত্ব পালন করা দরকার, যে চ্যালেঞ্জ আমার সামনে আসবে সেই চ্যালেঞ্জ আমার মোকাবেলা করতে হবে, এটা আমার আইনি দায়িত্ব। পেশাদারিত্বের সাথে সেই আইন প্রয়োগ করার দায়িত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে এবং এ আইনানুগ দায়িত্ব পালনে আমাদের সদস্যগণ কখনো কুণ্ঠাবোধ করেন না।
তিনি বলেন, আইনানুগ দায়িত্ব পালন করতে আমি বাধ্য। এই আইনানুগ দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ রয়েছে, প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস, ইকুইপমেন্ট ও সক্ষমতা রয়েছে।
আইজিপি বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য যে দায়িত্ব পালন করা দরকার সেই দায়িত্ব আইনানুগভাবে পেশাদারিত্বের সাথে আমরা সবসময় পালন করে আসছি।
এ সময় অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক, ডিআইজি (অপারেশনস) মো. আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (ডিআইজি) শেখ মো. রেজাউল হায়দার, ডিআইজি এস এম মোস্তাক আহমেদ খান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন।