গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ চায় ছাত্রদল
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি

বন্যা আক্তার:
ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে নো ওয়ার্ক, নো স্কুল আনটিল দ্য জেনোসাইড স্টপস— কর্মসূচির সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারসহ গাজায় অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে নো ওয়ার্ক নো স্কুল কর্মসূচির প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সংহতি জানিয়েছে। ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী কর্তৃক ৫১ হাজারের অধিক নিরীহ ফিলিস্তিন হত্যা করা হয়েছে। ফিলিস্তিনে যেসব নারী শিশুরা নিহত হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। ফিলিস্তিনে ধারাবাহিকভাবে যে গণহত্যা চলছে ছাত্রদল সেটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যারা রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই।
তিনি বলেন, গতকাল যে বা যারা বাটা, কেএফসি ও পিজ্জা হাটে হামলা চালিয়েছে তাদের নিন্দা জানাই। এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। কতিপয় ব্যক্তি যারা অনলাইনসহ বিভিন্ন জায়গা মব জাস্টিসের সূচনা করে তাদের প্রতি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি বর্তমান নির্দলীয় সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি আপনারা এসব মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আর যেন কোনো ধরনের মব জাস্টিস না হয় সে ব্যাপারে ছাত্রদল সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করছে। এতে নিজেদের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি হচ্ছে। আজকের এই প্রেক্ষাপটে আমাদের এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। এ সময় তিনি ভারতে সদ্য পাশ হওয়া ওয়াক্ফ বিল ব্যাপারে নিন্দা জানান।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, ফিলিস্তিনের শান্তিকামী মুসলমানরা নিজেদের আবাসভূমি স্থায়ী করার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু দখলদার ইসরায়েল সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে পঞ্চাশ হাজারেরও অধিক মানুষ নিহত হয়েছে। যার অর্ধেক নারী ও শিশু। এ রকম ধংসযজ্ঞ চলার পরেও যেসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান প্রতিবাদ জানাননি তাদেরকে আমরা ধিক্কার জানাই। আজ জাতিসংঘসহ সব মানবাধিকার সংগঠন নিশ্চুপ। গাজায় সর্বোচ্চ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেও তাদের কোনো প্রতিবাদ নেই। আজ থেকে যেখানে আমরা ইসরায়েলি পণ্য পাব সেখানেই বয়কট করব। আজ যদি সারা বিশ্বের মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে তাদের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণহত্যার পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ যোগাচ্ছে আমেরিকার মার্কিন বাহিনী। আমরা তার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই। মুসলিম বিশ্বের যারা মোড়ল তাদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়ান। আমরা অবিলম্বে ফিলিস্তিনের গাজায়, রাফায়, গণহত্যা বন্ধ চাই। সারা বিশ্বের মানুষ জেগে উঠেছে। গতকাল সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ইসরায়েলের কোন পণ্য বয়কট করব তার মানে এই না যে আমরা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করব। গতকাল বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের ব্যর্থতা এখানে লক্ষণীয়। তাদের উচিত ছিল আগে থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা। তা না হলে বাংলাদেশের নামে এই বদনাম হতো না।