
ক্রীড়া ডেস্ক:
শোয়েব আকতার-ব্রেট লিদের সময় চলে গেছে অনেক দিন আগেই। ক্রিকেট মাঠে গতির ঝড় তোলাদের মধ্যে এখনও যে ক’জন রয়েছেন, তাদের নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে উৎসাহ অনেক। প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা কিংবা ইংল্যান্ডের জোরফা আরচারদের সঙ্গে এবার স্পিড এক্সপ্রেসের নয়া বগি বাংলাদেশের নাহিদ রানা।
কয়েক মাস আগে পাকিস্তান সফরে গিয়েই নিজের জাত চিনিয়ে দিয়ে এসেছিলেন রানা। এবার তাঁকে ঘিরেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চলছে জোর আলোচনা। সেই রানার সাক্ষাৎকার নিয়েছে আইসিসি মিডিয়া। যেখানে চাঁপাইনবাগঞ্জের ছেলে রানা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর ক্যারিয়ারে এই প্রথম বিশ্বমঞ্চে খেলার সুযোগ মিলেছে, যা তিনি স্মরণীয় করে রাখতে চান। ‘বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের সামনে বোলিং করার সুযোগ পাচ্ছি– এটাই আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করি। যেখানে প্রতি মুহূর্তে অনেক কিছু শেখা যায়। আমার জন্য এমন মঞ্চে মানিয়ে নেওয়া সহজ ছিল না। তবে আমি ভাগ্যবান, এখানে আসার আগে আমি ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির অনেক ম্যাচ খেলেছি। সেখানে আমি ভিন্ন কন্ডিশনে, ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচ পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া শিখেছি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পূর্ণই ভিন্ন।’
গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় বছর বাইশের এই পেসারের। প্রথম ইনিংসেই লঙ্কানদের তিন উইকেট তুলে রানা তাঁর দম জানিয়ে দেন। এর পর পাকিস্তান সফরে গিয়ে গতির ঝড় তুলতে থাকেন। ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটারের ওপর বোলিং করতে থাকেন। পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার বাবর আজম, শান মাসুদ, শান সৌদ শাকিল রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়ে যান রানার গতির সামনে। প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এবারও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেই রাওয়ালপিন্ডিতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। ফরম্যাট ভিন্ন হলেও আশাবাদী রানা।
‘আমি প্রতিদিনই মাঠ এবং মাঠের বাইরে কিছু না কিছু শিখছি। কীভাবে শরীরের যতœ নিতে হয়, ফিটনেস ধরে রাখতে হয় এবং তার জন্য খাদ্যাভ্যাস কেমন হতে হয়– সবকিছুই মেনে চলার চেষ্টা করছি। কোচ এবং দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের থেকে অনেক কিছু শিখছি। আমাদের পেস বোলার গ্রুপটা বেশ ভালো। আশা করি, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ভালো উইকেট পাব।’
বাংলাদেশ বোলিংয়ের এই নতুনকে নিয়ে আইসিসির আগ্রহ অনেক। রানা কোন শহর থেকে উঠে এসেছেন, তাঁর বেড়ে ওঠার পেছনের গল্পগুলো শুনতে চাওয়া হয়েছিল। ‘আমি যে শহর থেকে এসেছি, সেখানে ক্রিকেটের চেয়ে বিখ্যাত সেখানকার আম। শুরুতে টেপ টেনিস দিয়েই খেলা শুরু করি। তখন মনে হচ্ছিল, আমি অন্যদের চেয়ে একটু বেশি জোরেই বোলিং করি। হয়তো আমি আমার উচ্চতার কারণেই বাড়তি বাউন্স পেয়ে থাকি। আমাদের রাজশাহীর কোচ আলমগীর কবির। তিনিই আমাকে টেনিস বল ছেড়ে ক্রিকেট বলে বোলিং করার জন্য উৎসাহ দেন। জাতীয় দলের সাবেক ওই বোলার আমাকে বোলিংয়ের রানআপ এবং কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার শুধরে দেন। সেজন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’