করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। শুক্রবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে।
পরিসংখ্যান ভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ডোমিটারস জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ১৩২টি দেশের ১ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৬ জন মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫ হাজার ৮০ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭০ হাজার ৭১৪ জন।
ওয়েবসাইটটি জানাচ্ছে, বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৬২ হাজার ৩৬০ জন মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৫ হাজার ৭৫৯ জনের অবস্থা সঙ্কাটাপন্ন আর ৫৬ হাজার ৬০১ জনের অবস্থা স্থিতিশীল।
ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি চীনে। দেশটিতে ৮০ হাজার ৮১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৭৭ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে চীনের পরেই আছে ইতালি দেশটিতে ১ হাজার ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ইরানে ১১ হাজার ৩৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৫১৪ জন।
ওদিকে কীসে এই দাপট কমবে করোনাভাইরাসের, এ নিয়ে চলছে গবেষণা।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে তাপমাত্রা ও করোনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নানা তত্ত্ব। নানারকম গবেষণাও চলছে এই নিয়ে। তাপমাত্রা বাড়লেই প্রভাব পড়ে এই ভাইরাসের ওপর, যা এটি সহ্য করতে পারে না। দাবি, একদল গবেষকের।
অন্য আরেকদল গবেষকের আবার দাবি, ক্রমাগত জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে এই ভাইরাস। এ নিয়ে আশা-আশঙ্কা বিরাজমান চিকিত্সকদের কণ্ঠে।
১২ মার্চ, শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গরম বাড়লে করোনা ভাইরাস ক্ষমতা হারাবে, এমন তত্ত্বে সিলমোহর দেওয়া যাচ্ছে না। সাংবাদিক সঙ্গে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছে, ভাইরাসের চরিত্র এখনও অজানা। উচ্চ তাপমাত্রায় ভাইরাসের ক্ষমতা লোপ পাবে কিনা, তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
চীনে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ৮.৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠার পর ভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে আবার দাবি করেছে, বেশি তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা সহ্য করতে পারে না এই ভাইরাস।
অন্যদিকে হাভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুলের একটি গবেষণা বলছে, চিনেই ঠাণ্ডা ও গরম দুরকম পরিবেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। তাই এমন দাবি অবান্তর।
আবার, চীনেরই পিকিং ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ লাইফ সায়েন্সেসের একদল গবেষক নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। তাদের দাবি, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে এই নোভেল করোনাভাইরাস আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।
এমন পরিস্থিতিতে গরমে করোনাভাইরাসের আক্রমণ কমবে এমন চিন্তায় আপ্লুত না হয়ে বরং সতর্ক থাকাটাই সবচেয়ে ভালো উপায়। নয়তো বড় কোনো বিপদ নেমে আসতে পারে।