গরুতে ধান খাওয়া নিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ৪০

প্রকাশিত: ৪:৫০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নে গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।

 

 

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আস্তমা গ্রামের উত্তরে এবং কামরুপদলং মাদ্রাসার পূর্ব-পশ্চিম বন্দ এলাকায় সংঘর্ষ চলে। ঘটনায় উভয় গ্রামের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে আস্তমা গ্রামের দুজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং কামরুপদলং গ্রামের তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে। এ ছাড়া, অন্যান্য আহতরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আস্তমা গ্রামের আহতদের মধ্যে রয়েছেন—আক্তার হোসেন (৩০), দুলাল মিয়া (২০), জুয়েল মিয়া (৩০), শামসুজ্জামান (২৮), নাছির আলী (৫০), আবদুল জলিল (৩০), খাইরুল আমীন (২৬), এমরান হোসেন (২৮), সাদিক মিয়া (৪৫), নুরুজ্জামান (৩৫) ও সৌরভ হোসেন (২৬)। গুরুতর আহত আক্তার হোসেন ও দুলাল মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কামরুপদলং গ্রামের আহতদের মধ্যে রয়েছেন—বাতির আলী (৫৬), সুন্দর আলী (৭০), সুজন মিয়া (৩৫), কালাই মিয়া (২৭), মতিউর রহমান (৩২), শওকত আলী (২৭), নবী হোসেন (২২) ও শাফি আহমেদ (২৫)। গুরুতর আহত বাতির আলী, সুন্দর আলী ও সুজন মিয়াকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে আস্তমা গ্রামের কৃষক বজলু মিয়ার গরু কামরুপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খেয়ে ফেলে। এ নিয়ে জমিতেই দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে বিষয়টি দুই গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়, যা রোববার সকালে সংঘর্ষে রূপ নেয়।

আস্তমা গ্রামের আঙ্গুর মিয়া বলেন, গরু অবুঝ প্রাণী, সে বুঝে না কার জমিতে যাবে। কিন্তু এ ঘটনার জেরে আমাদের গ্রামের বজলু মিয়া ও তার পরিবারকে মারধর করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ মীমাংসার জন্য কথা বলছিলাম, কিন্তু সকালেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ বাধে।

অন্যদিকে, কামরুপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, শনিবার হাতাহাতির পর আমরা চেয়েছিলাম গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে। কিন্তু আস্তমা গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা চালায়। এরপর আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না।

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংঘর্ষের খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি বা কোনো মামলা দায়ের হয়নি। যদি কোনো পক্ষ অভিযোগ জানায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।