জেলা প্রতিনিধি,পিরোজপুরঃ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটে লাথির পর গর্ভের সন্তান হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। বুধবার সকালে উপজেলার হারজী বাজারে তারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। সেখানে বক্তারা মামলা হওয়ার সাত দিন পরও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এলাকাবাসী জানায়, সদর ইউনিয়নের বকসির ঘটিচোরা গ্রামের মিরাজের মুদি দোকান থেকে বাকিতে পণ্য নিতেন সবুজনগর গ্রামের দিনমজুর মনির সরদার। তাঁর কাছে ৩৪০ টাকা পাওনা ছিল মিরাজের। ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার দোকানের সামনে মনিরকে তাগাদা দেয় মিরাজ। কয়েক দিনের কর্মহীনতার কথা জানিয়ে মনির পরদিন বুধবার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চলে যান।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মিরাজ। সে রাতেই দুই ভাই নিজাম ও মিলনকে নিয়ে মনিরের বাড়িতে গিয়ে টাকার জন্য তাগাদা দিয়ে গালাগাল করতে থাকে। এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তারা চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় দফায় এসে মনিরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুবি বেগম এগিয়ে এলে তাঁর পেটে লাথি মারে মিরাজ। নিজাম ও মিলন মিলে মনিরকে একটি শুকনো পুকুরে নামিয়ে বিবস্ত্র করে মারধর করে।
তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। দ্রুত স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
মনির সরদার বলেন, তাঁর স্ত্রীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ফলে ড্রিম হেলথ ক্লিনিকে ভর্তির পর বুধবার গভীর রাতেই চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করে মৃত মেয়ে সন্তান বের করেন। রুবি এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় মনির বাদী হয়ে ২ মে মঠবাড়িয়া থানায় মিরাজ, নিজাম ও মিলনকে আসামি করে মামলা করেন। কিন্তু সাত দিনেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এতে ক্ষোভ জানিয়ে বুধবার বক্তব্য দেন মো. কবীর শরীফ, রুবির স্বামী মনির সরদার, স্বজন মাহিনুর বেগম, রুম্মান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. সুলতান শরীফ।মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।