গাইবান্ধায় সংবাদপত্র বিক্রেতা আনিস হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
সংবাদপত্র বিক্রেতা আনিস হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে গানাসাস মার্কেটের সামনে আজ রোববার মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এরপর বেলা ১১টা থেকে আধা ঘণ্টা ডিবি রোডের ট্রাফিক মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এ সময় সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন।
খবর পেয়ে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে যান। তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এ সময় অবরোধকারীরা আসামিদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, রিকশা–ভ্যান ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক লাভলু মিয়া, এলাকাবাসীর পক্ষে আবদুল ওহাব, রাজা মিয়া, আবদুল খালেক, জাহাঙ্গীর আলম, নিহত আনিস মিয়ার স্ত্রী কবিতা বেগম, বোন হেনা বেগম, ছেলে প্রান্ত মিয়া, চাচা রিজু মিয়া প্রমুখ। আনিস মিয়ার স্ত্রী কবিতা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামী দিন–রাত পরিশ্রম করে সংসার চালাত। সে কী দোষ করেছিল। তাকে কারা মেরে ফেলল। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
আনিস মিয়া (৩৭) গাইবান্ধা সদর উপজেলার কিশামত ফলিয়া গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে। তিনি ১৫ বছর ধরে গাইবান্ধা শহরে সংবাদপত্র ফেরি করে বিক্রি করেন। পত্রিকা বিক্রির পর প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অটোবাইক চালাতেন।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত যাত্রী সেজে জেলা স্টেডিয়ামে যাওয়ার কথা বলে আনিসের অটোবাইকে ওঠে। স্টেডিয়ামে যাওয়ার পর ওই দুর্বৃত্তরা আনিসকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার পর অটোবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে আনিসের স্ত্রী কবিতা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার তিন দিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। বক্তারা বলেন, পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে গড়িমসি করছে। আনিসকে হত্যার খবর পেয়ে ৯৯৯–এ ফোন দেওয়ার পরও পুলিশ অনেক পরে সেখানে যায়। অথচ সদর থানা কার্যালয় থেকে ৫০০ গজ দূরেই জেলা স্টেডিয়াম। সেখানেই রাতে আনিসকে হত্যা করে অটোবাইক ছিনিয়ে নেওয়া হয়। শহরে নিয়মিত পুলিশ টহলের ব্যবস্থা থাকলে এ ঘটনা ঘটত না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আনিস হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে গাইবান্ধায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। তাঁদের দাবি, গত কয়েক মাসে অসংখ্য খুনের ঘটনা ঘটেছে। চুরি ও ছিনতাই বেড়ে গেছে। কিন্তু পুলিশের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
আনিস হত্যার বিষয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান তালুকদার বলেন, আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আনিস হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হব