গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের অধীনে পরিচালিত ছয়টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে কারখানার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়
বন্ধ কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, তুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড এবং তুসুকা ওয়াশিং লিমিটেড।
কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশে উল্লেখ করে, গতকাল শনিবার থেকে শ্রমিকদের একটি দল কিছু অজ্ঞাতনামা বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনি ধর্মঘট শুরু করে। শ্রমিকরা আজ সকালবেলা হাজিরা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করে কারখানার প্রধান গেটে এসে জড়ো হয় এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করে। কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিকবার শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানালেও শ্রমিকরা তা অমান্য করে। শ্রমিকদের একটি অংশ অস্থিতিশীল আচরণ প্রদর্শন করে, যা দাঙ্গাহাঙ্গামা এবং মারামারির মতো অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্রমিকদের এমন কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর আওতায় অবৈধ ধর্মঘট হিসেবে গণ্য হয়। শ্রমিকদের এহেন কর্মকাণ্ডে কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সম্পত্তির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ায় তুসুকা গ্রুপ বাধ্য হয়ে ৩ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে কারখানাগুলোর কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে তুসুকা গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এবং পুনরায় কাজের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হলে কারখানাগুলো পুনরায় খোলার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এদিকে শ্রমিকদের দাবি ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে কারখানা এলাকায় উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকদের অনেকে দাবি করছেন, তারা হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করেই ধর্মঘটে যাওয়ার বিষয়টি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবু তালেব
বলেন, শ্রমিকদের বেশকিছু দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করতে পারেনি। যার কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দিয়েছে।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন বলেন, আমাদের কাছে খবর ছিল আজ কিছু কারখানায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যার কারণে কারখানা শ্রম আইন অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।