বিনোদন ডেস্ক:
সাঈদ হাসান টিপু। অবসকিওর ব্যান্ডের দলনেতা ও তারকা কণ্ঠশিল্পী। সম্প্রতি সুরের পিয়াসী এন্টারটেইনমেন্ট ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর একক গান ‘স্বপ্ন ছুঁতে চায়’। এ আয়োজন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন
চার দশকের শিল্পী জীবনে ব্যান্ড অবসকিওর নিয়েও ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। হঠাৎ ব্যান্ডের বাইরে একক গান প্রকাশের ইচ্ছা হলো?
এ কথা সত্যি যে, অবসকিওরের বাইরে একক গান গাওয়া বা কোনো আয়োজনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা কখনোই ছিল না। তারপরও এমন কিছু মানুষ আছে, যাদের আবদার, অনুরোধ ফেলে দেওয়া কঠিন। বিনোদ রায় তাদেরই একজন, যার ছোট্ট একটা চাওয়া অপূর্ণ রাখা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। এ জন্যই তাঁর সুর-সংগীতায়োজনের ‘স্বপ্ন ছুঁতে চায়’ গানটি গাওয়ার।
আনুরোধ রাখতে গিয়ে একবারও কী মনে হয়েছে, একক গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল হয়ে যাচ্ছে?
কখনোই এমন কথা মনে স্থান পায়নি। কারণ, বিনোদ একই সঙ্গে অবসকিওরের সহযোদ্ধা ও খুব কাছের একজন। গানের ভুবনে বহু বছর ধরে একসঙ্গে পথ চলছি আমরা। তাই সংগীতের প্রতি বিনোদের যে ক্ষুধা, সৃষ্টি নিয়ে তাঁর যে ভাবনা– তা অজানা নয়। তাই ও যখন বলল, আমার জন্য একটি গান তৈরি করেছে, তখন অনুমান করছি, আমার কণ্ঠ ও গায়কী মাথায় রেখেই কাজটি করেছে। এরপর অমিত গোস্বামীর লেখা ‘স্বপ্ন ছুঁতে চায়’ গানের সুর শুনে নিশ্চিত হয়েছি, গানটি আমার কথা ভেবেই তৈরি করেছে বিনোদ।
অবসকিওরের নতুন কোনো আয়োজন নিয়ে ভাবছেন?
এ মুহূর্তে ব্যান্ড অ্যালবাম বা শো নিয়ে একদমই ভাবছি না। দেশের যে পরিস্থিতি, সেখানে দাঁড়িয়ে নতুন কিছু করতে চাওয়া এক ধরনের বিলাসিতা বলেই মনে করি। গান বাজনার জন্য মানসিক শান্তি জরুরি। দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতায় আর যা-ই হোক, ক্রিয়েটিভ কাজ করা সম্ভব নয়। খেয়াল করলে দেখবেন, শুধু অবসকিওর নয়, প্রথম সারির বেশির ভাগ ব্যান্ড নতুন কোনো আয়োজন করছে না। যেসব কাজ করে রেখেছে, সেগুলোর প্রকাশনাও পিছিয়ে দিয়েছে। বিদেশ সফরে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু দেশে তাদের বড় কোনো আয়োজন নেই। এমনিতে শো হচ্ছে না বললেই চলে। মাঝে কিছু শো হয়েছে, সেটাও বন্যার্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য। টিকিট কনসার্ট বা রেগুলার শো বলতে যা বুঝায়, তা খুব একটা চোখে পড়ছে না।
আগামী বছর অবসকিওর ব্যান্ডের পথচলার চার দশক পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে নতুন, পুরোনো সদস্যদের নিয়ে ব্যান্ডের রি-ইউনিয়ন কনসার্ট, স্মারক অ্যালবাম প্রকাশ বা অন্য কিছু করার পরিকল্পনা আছে?
ব্যান্ডের রি-ইউনিয়ন করতে তো চাই, কিন্তু স্পন্সর কী পাব? এ প্রশ্নই বারবার মনে ঘুরপাক খায়। কারণ, তৈলমর্দন, অনুরোধ, আবদার করে কিছু আদায় করা যে স্বভাবে নেই। এই যে আমরা এতগুলো ব্যান্ড অ্যালবাম প্রকাশ করেছি, তার বিনিময়ে যেটুকু পাওয়ার ছিল, তা কী পেয়েছি? পাইনি। চিরকাল ঠকেছি, তবু অভিযোগ তুলিনি। আমাদের গানগুলো শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারার আনন্দটাই বড় করে দেখেছি। তারপরও নিরাশাবাদী নই বলেই রি-ইউনিয়নের পাশাপাশি গানের ভুবনের চিত্র বদলে যাবে, এ আশায় প্রহর গুনে যাচ্ছি।