গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে জামালপুরের ঝিনাই নদীর দু’তীরে হাজারো মানুষের ঢল
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার বুক চিরে বইছে ঝিনাই নদী। আর এ নদীতে তিন দিনব্যাপী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চরবালিয়া ব্রিজপাড় সংলগ্ন নদীতে আজ রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পর্বে বাংলার সম্রাট, রকেট এবং একতা নামে তিনটি নৌকা অংশ নেয়। নৌকাবাইচ দেখতে নদীর দুপাড়ে হাজারো নারী পুরুষের ঢল নামে।
স্থানীয় ও আয়োজক কমিটি সূত্র জানায়, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উপজেলার চরবালিয়া যুব সমাজ ও বলারদিয়ার যুব সমাজের উদ্যোগে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রথমদিন ১১টি নৌকা অংশ নেয়। এর মধ্যে থেকে বাছাই করে তিনটি নৌকাকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত করা হয়। নৌকাবাইচ দেখতে সকাল হতেই দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ এসে নদীর দুপাড়ে ভিড় করেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষে চ্যাম্পিয়ন পেয়েছে একটি মোটরসাইকেল, দ্বিতীয় স্থান অধিকারীরা পেয়েছে একটি ষাঁড় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীরা পেয়েছে একটি এলইডি টিভি।
প্রতিবছরই খেলা দেখতে আসেন ৮৮ বছরের বৃদ্ধ মজিবুর রহমান। এবারও তিনি এখানে এসেছেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নৌকাবাইচ দেখতে। তিনি নিউজ পোস্টকে বলেন, বাপ-দাদারা বেঁচে থাকতে আমাদেরও বাইচের নৌকা ছিল। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। তাই যেখানেই নৌকাবাইচের কথা শুনি সেখানেই ছুটে যাই। এর পাশে দাঁড়িয়ে মজিবুরের কথা শুনছিলেন তার দুলাভাই ৯০ বছরের বৃদ্ধ মকছেদ আলী। তিনি হেসে হেসে বলেন, নৌকাবাইচ গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য। এ প্রতিযোগিতা দেখতে ভালো লাগে। তাই শ্যালক মজিবুরের সঙ্গে দুদিন ধরে নৌকাবাইচ দেখছি। আজ ফাইনাল দেখতে এসেছি। নদীর দুই তীরে অপেক্ষায় থাকা উৎসুক জনতার করতালিতে শেষ হয় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ নৌকাবাইচ।
আয়োজক কমিটির সদস্য ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন নিউজ পোস্টকে বলেন, নৌকাবাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বহন করে। এ খেলা একসময় গ্রামের আনাচে-কানাচে দেখা গেলেও এখন চোখে পড়ে না। তবে আমরা চিন্তা করেছি ঝিনাই নদীতে প্রতিবছরই এ খেলার আয়োজন করবো। যাতে বছরের একটা দিন অন্তত এ অঞ্চলের মানুষ আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।