জেলা প্রতিনিধি,জামালপুরঃ
যেদিকে চোখ যায় শুধু বোরো ধানের খেত। তবে কয়েকদিনের তীব্র দাবদাহ ও লোডশেডিংয়ে ধানখেতে পানির অভাবে দেখা দিয়েছে ফাটল। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের ছবিলাপুর এলাকার ধানখেতে পানির অভাবে ফাটল ধরেছে।
কৃষকেরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা বেড়েছে, সেই সঙ্গে হচ্ছে ঘন ঘন লোডশেডিং। ফলে বোরো ধানখেতে মোটর দিয়ে পানি দেওয়া যাচ্ছে না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। ধানখেতে পানি দিতে না পারায় খেত শুকিয়ে গেছে ৪-৫ দিন আগে থেকেই। তাপমাত্রা বেশি থাকায় এখন ফাটল ধরেছে। এখন ধানের শীষ বের হওয়ার সময়। খেতে পানি না দিলে ক্ষতি হয়ে যাবে।
উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের ছবিলাপুর এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজের সমাহার। মাঠজুড়ে সবুজ ধানখেত। কিন্তু ঠিকমতো বিদ্যুৎ না থাকায় খেতে পানি দিতে না পারায় খেত শুকিয়ে গেছে। ৪-৫ দিন ধরে যেসব জমিতে পানি দেওয়া হয়নি এসব জমি ফাটল ধরেছে।
মেলান্দহ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ২০ হাজার ২৫০ হেক্টর জমি। বোরো ধান চাষ হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের চেয়ে ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ কম হয়েছে।
ছবিলাপুর এলাকার কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, রাত-দিন মিলে সর্বোচ্চ চার থেকে তিন ঘণ্টা কারেন্ট থাকছে। দিনের বেলায় সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা আর রাতের বেলায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা কারেন্ট থাকে। যতক্ষণ কারেন্ট থাকে ততক্ষণে সর্বোচ্চ দুই বিঘা জমিতে পানি দেওয়া যায়। আর বাকি জমিতে পানি দেওয়া যায় না।কৃষক আলতাফুর রহমান বলেন, সব ধান গাছ থেকে শীষ বের হচ্ছে। এই সময় খেতে পানি নেই। এখন যদি পানি না থাকে তাহলে বেশিভাগ ধান চিটা হবে। সব খেত শুকিয়ে গেছে। অনেক খেতে ফাটল ধরেছে।
কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, খেত ফাটল ধরে চৌচির হয়ে গেছে, কিছু কিছু খেতে সাত দিনে একদিন পানি যায়। কারণ কারেন্ট রাতে একটানা আধ ঘণ্টা থাকলে আবার দুই ঘণ্টা নেই। একটি মোটর দিয়ে ৫/৬ বিঘা জমিতে পানি দেওয়া হয়। কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কারেন্ট থাকলে পানি ঠিকমতো দেওয়া যেত।
মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, যেসব ধানে শীষ বের হচ্ছে ওই সব খেতে এখন পানি না থাকলে ধান চিটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই গরমে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আমি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি রাত ১২টার পর নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য যেন কৃষকেরা ঠিকমতো সেচ দিতে পারে।জামালপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজালাল নির্ঝর বলেন, চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। আমার ১৭০ মেগাওয়াটের বিদ্যুতের তুলনায় আমরা পাচ্ছি ৮০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট। তাই লোডশেডিং করা হচ্ছে।