ভ্রমণ ডেস্কঃ
ধীরে ধীরে শহরের ব্যস্ত দিনগুলোয় জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেছে শীত। শীতকাল এলে স্বভাবতই একটু আলসেমি ভর করে। অনেকেই এই অলস সময় কাটান চায়ের কাপ হাতে বা বারান্দায় বসে শীত উপভোগ করে। আবার অনেকেই চান প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য দূরে কোথাও ঘুরতে যেতে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি—পুরো সময়টাই ঘুরতে যাওয়ার জন্য সেরা সময়। আর এ সময় ছুটির আশায় অনেকেই সারা বছর অপেক্ষা করেন। বছরের শেষে এই শীতের সময়টায় পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার খুবই ভালো সুযোগ। আবার ছুটি ম্যানেজ হলে কোথায় ঘুরতে যাব, তা ঠিক করাটা হয়ে ওঠে অন্য রকম বিড়ম্বনার। এই বিড়ম্বনায় যেন না পড়তে হয়, সে জন্য জেনে নিন দেশের ভেতর কোথায় ঘুরতে যাবেন এই শীতের মৌসুমে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি—পুরো সময়টাই ঘুরতে যাওয়ার জন্য সেরা। শীতকালে সাধারণত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাওয়ার ঝোঁক বেশি দেখা যায়।
সারা বছরই কক্সবাজারে পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও শীতকালে কক্সবাজার ভ্রমণ হয় সবচেয়ে আরামের। গ্রীষ্মকালের কাঠফাটা রোদে সমুদ্রপাড়ে বসে থাকা যতটা অসহ্যকর, শীতকালের সমুদ্রপাড়ে বসে মৃদু রোদ উপভোগ করাটা ততটাই স্বস্তির। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য স্থল ও আকাশপথ—দুটিই ব্যবহার করা যায়। অনেকেই এখন সময় বাঁচানোর জন্য এবং স্বাচ্ছন্দ্যের কথা চিন্তা করে আকাশপথ বেছে নেন। শীতকালে ঘুরতে যাওয়ার তালিকায় কক্সবাজারের পরই চলে আসে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নাম। সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হচ্ছে জাহাজে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাওয়ার সময়টা। অপূর্ব সুন্দর দ্বীপের দিকে ছুটে যাওয়ার পথে অপার সমুদ্র আর কিছুক্ষণ পরপর দেখা যাওয়া সারি সারি সাদা গাঙচিল প্রাণভরে উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা। এই দৃশ্যের সৌন্দর্য নিজ চোখে না দেখলে লিখে বোঝানো সম্ভব নয়। সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার জন্য এখন বেশ কিছু জাহাজ সচল রয়েছে। দেশের ভেতর ঘুরতে যাওয়ার জন্য আরেকটি রোমাঞ্চকর জায়গা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণ ও সুন্দরবনের বিখ্যাত বনজ প্রাচুর্য ছাড়াও অনেক লুকায়িত আকর্ষণ রয়েছে, যা বনের যত গভীরে যাওয়া হয়, ততই উপলব্ধি করা যায়। এ জন্যই দর্শনার্থীরা, বিশেষ করে শীতকালকে বেছে নেন সুন্দরবন ঘুরে দেখার জন্য। সুন্দরবন যাওয়ার জন্যও ঢাকা থেকে খুলনা পথে জাহাজের ব্যবস্থা আছে। বৃষ্টির সময় পাহাড়ের সবুজ প্রকৃতি দেখার সেরা সময় হলেও শীতের সময় কিন্তু অন্য রকম একটা আমেজ থাকে। এই সময় বান্দরবানের উঁচু পাহাড় থেকে সারি সারি মেঘের বসতি দেখা যায়। পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মেঘকে ছুঁয়ে দেখতে পারবেন—এই অনুভূতি একমাত্র ওই জায়গায় গিয়েই অনুভব করা সম্ভব।
যদি আপনি পাহাড়ি দুর্গম পথ অতিক্রম করতে চান, তাহলে চাইলে খুঁজে বের করতে পারেন চোখধাঁধানো কিছু অবাক করা দৃশ্য। সাকা হাফং ও কেওক্রাডংয়ের মতো উচ্চতম পয়েন্টগুলো এমনই কিছু পাহাড়ের চূড়া। আর যদি একটু আরামে ছুটিটা কাটাতে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন বান্দরবানে থাকা কোনো রিসোর্ট। এই রিসোর্টগুলো অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন।আর এই প্রস্তুতি শুরু করার সময় এখনই। আপনার যাপিত জীবনের ব্যস্ত সময় থেকে একটু ছুটি নিয়ে সাগর বা পাহাড়—ঘুরে আসুন যেখানে মন চায়।