ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি পৌনে ২ লাখ হেক্টর ফসলি জমি

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাত ও অতিবৃষ্টিতে ১ লাখ ৭১ হাজার ১০৯ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের করা প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির এই তথ্যটি সাংবাদিকদের জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতে ৭ থেকে ৮ দিন লেগে যাবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

অধিদপ্তরের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৮টি জেলায় রেমালের প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩টি জেলা।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রোববার ও সোমবার কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে মাঠে দণ্ডমান ফসলি জমির পরিমাণ প্রায় ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৫ হেক্টর আর আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার ১০৯ হেক্টর।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫২ হাজার ১৯০ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন সবজি, ১০ হাজার ৮৪৩ হেক্টর আউশ বীজতলা, ২১ হাজার ৪৩৪ হেক্টর আউশের জমি, ৭ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমির বোরো ধান, ৪ হাজার ৮২৬ হেক্টর জমির বোনা আমন, ২৯ হাজারের হেক্টরের বেশি জমির পাট। এ ছাড়া তিল ও মরিচেরও বেশ ক্ষতি হয়েছে। আর ৭ হাজারের হেক্টরের বেশি জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফলের মধ্যে আমের জমি ৪ হাজার ৭০৮ হেক্টর, লিচুর ১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর এবং ৭ হাজার ৬১৩ হেক্টর জমির কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাংলাদেশে গত রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় উপকূলের অনেক এলাকা। ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে বানের জলে ভেসে, দেয়াল ও গাছ চাপায়, আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে প্রাণ গেছে অন্তত ১৬ জনের।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ ঝড়ে দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। এর মধ্যে খুলনায় ৪ লাখ ৫২ হাজার মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাগেরহাটে এ সংখ্যা পাঁচ লাখ ও বরগুনায় সাড়ে পাঁচ লাখ। পিরোজপুরে সর্বোচ্চ নয় লাখ মানুষ দুর্গতির শিকার হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে দেশের উপকূলীয় ও আশপাশের ১৯টি জেলায় প্রায় পৌনে দুই লাখ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ৪০ হাজার ৩৩৮টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৮টি ঘরবাড়ি।

গত ২২ মে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় শনিবার সন্ধ্যায়। তখন এর নাম দেওয়া হয় রেমাল। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।