চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম নূরুল করিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ও শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের সামনে তাকে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তি দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা।
জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে নূরুল ও তার দুই সহপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শহীদ আব্দুর রব হলের দিকে যাচ্ছিলেন। পরিবহন দপ্তরের সামনে এলে মুখোশ পরা পাঁচজন ব্যক্তি গতিরোধ করে তাকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। পরে অন্য দুই সহপাঠী বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডিকে বিষয়টি জানান। প্রক্টরিয়াল বডি নূরুলকে আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদ–সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করেন।
জানতে চাইলে নূরুলের সহপাঠী জুবায়ের হোসেন বলেন, নূরুল করিমকে তুলে নিয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের পাশে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে পা ও পিঠে জখম করা হয়। মারধরকারীরা মুখোশধারী ছিল। সংখ্যায় তার ছিল পাঁচজন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের পাশে তাকে ফেলে রেখে চলে যায়।
মারধরে আহত হওয়ার পর নূরুল করিমকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোন্দকার মোহাম্মদ আতাউল গণি বলেন, ওই শিক্ষার্থীর ডান হাঁটুর নিচে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাড় ভেঙে যেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে আমরা তাকে চমেকে পাঠিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডি নূরুলকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এদিকে নূরুল করিমকে মারধরের ঘটনা জানাজানি হলে রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
এ সময় গত এক মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পাঁচটি চোরাগোপ্তা হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। প্রক্টরিয়াল বডি এসব ঘটনার কোনোটির ব্যবস্থা নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ও প্রক্টরিয়াল বডি এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফটক খুলে দেন।