ডেস্ক রিপোর্টঃ
চলতি বছর এ পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ তিউনিশিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ২০২২ সালের তুলনায় তা ২৬০ শতাংশ বেশি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করার সময় ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।
গত বছরের একই সময়ের মধ্যে এক হাজার ৬৮০ জন অভিবাসী নিহত বা নিখোঁজ হয়েছিলেন।
ইউএনএইচসিআর নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক রুভেন মেনিকদিওয়েলা নিরাপত্তা পরিষদে বলেছেন, ‘অভিবাসী ও শরণার্থীরা প্রতি পদক্ষেপে মৃত্যু ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি নিয়ে থাকে।’
নিউ ইয়র্কে যখন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার পক্ষ থেকে এই বক্তব্য এসেছে, একই দিনে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা সমুদ্রপথে ইতালি আসা অভিবাসন কিভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায় তা নিয়ে আলোচনায় বৈঠকে বসেছেন।
ইইউ সদস্য রাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাধারণ আশ্রয় ব্যবস্থায় সুদূরপ্রসারী সংস্কারের জন্য বছরের পর বছর ধরে আলোচনা চললেও কোনো ফলাফল আসেনি। এবারও বিভিন্ন শর্ত নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে ইতালি এবং জার্মানির মধ্যে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করার সময় ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।
জাতিসংঘ কী বলছে?
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৮৬ হাজার মানুষ এরইমধ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন।
এর মধ্যে এক লাখ ৩০ হাজারই এসেছেন ইতালিতে। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাকি অভিবাসীরা এসেছেন গ্রিস, স্পেন, সাইপ্রাস এবং মাল্টায়।
সবচেয়ে বেশি অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়েছেন তিউনিশিয়া থেকে। এ সংখ্যা প্রায় এক লাখ দুই হাজার। লিবিয়া থেকে এসেছেন ৪৫ হাজার মানুষ।
মেনিকদিওয়েলা জানিয়েছেন, অন্তত ৩১ হাজার মানুষকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বা তিউনিশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। লিবিয়ার ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ১০ হাজার ৬০০ জন।
মেনিকদিওয়েলা নিরাপত্তা পরিষদকে মনে করিয়ে দেন যে সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলো থেকে লিবিয়া এবং তিউনিশিয়ার উপকূলে আসার পথটুকু ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুটের একটি।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণের চোখের আড়ালে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।’ তিউনিশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামেল ফেকিহ ডিডাব্লিউকে বলেছেন, অভিবাসীদের ইউরোপের পথে যাত্রা ঠেকাতে তার দেশের সীমিত সামর্থ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছি যে, অভিবাসন এর কারণগুলোর সমাধান না করে অভিবাসন ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়। তিউনিশিয়া কেবল নিজস্ব সীমানা রক্ষা করতে পারে। (পরোক্ষভাবে) নিজস্ব সীমানা পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া অন্যদের জন্য সীমান্ত রক্ষী হিসেবে কাজ করতে পারে না।’
ফেকিহ তার দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করেছেন। ‘তিউনিশিয়া একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তাই আমরা সাব-সাহারান এবং সাহেল দেশগুলো থেকে এত সংখ্যক আফ্রিকান অভিবাসীদের নিতে অক্ষম।’