দল গোছানোর অংশ হিসেবে চলতি মাসের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ মহানগর, জেলা ও উপজেলা কমিটির সম্মেলন করবে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে দুই মাসেরও বেশি আগে সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের মধ্যেই দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। নানা কারণে অভিমানে দূরে থাকা পোড়খাওয়া নেতাকর্মীদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে উত্তরে সভাপতি হন শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। আর দক্ষিণে সভাপতি হন আবু আহাম্মদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির। এর পর ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন পিছিয়ে যায়। তবে মুজিববর্ষ সামনে রেখে দল গোছানোর অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলনের দিকে নজর দিচ্ছে। পাশাপাশি যেসব ইউনিটে সম্মেলন হয়েছে সেগুলোয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় সফরে ইতালি যাওয়ার আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিসহ সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি করতে নির্দেশনা দিয়ে যান। এর পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক রূপরেখা নিয়ে আলোচনাও করেন। সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ১৫-২০ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগরের রাজনীতিতে পদপদবির বাইরে থাকা অভিমানী নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার নির্দেশনা রয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতির। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ত্যাগী ও দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল নেতাকর্মীদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সর্বশেষ কমিটিতে অনেক বিতর্কিত নেতা স্থান পাওয়ায় শেখ হাসিনা মনঃক্ষুণ্ন ছিলেন। এবারের কমিটিতে যাতে কোনো বিতর্কিত বা অনুপ্রবেশকারী স্থান না পান, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেন তিনি। সূত্রমতে, বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে অন্তত ছয় মাস লাগবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির আমাদের সময়কে বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পরই সিটি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন বিলম্বিত হয়েছে। তবে আমরা কাজ শুরু করেছি। চলতি মাসের মধ্যেই আশা করছি পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারব।
মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে। আমরা কাজ শুরু করেছি। তিনি বলেন, থানা কমিটির ক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হবে। আমরা পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড ও থানা কমিটি করব।