চাঁদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
চাঁদপুর প্রতিনিধি:
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে (২৫) যৌতুকের দাবিতে হত্যার দায়ে স্বামী মো. মহিন উদ্দিনকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুল হান্নান এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম মন্টু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হত্যার শিকার মরিয়ম বেগম হাজীগঞ্জ উপজেলার মোল্লারডর মিজি বাড়ির হাজী নেয়ামত উল্লাহ মিজির মেয়ে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. মহিন উদ্দিন একই উপজেলার পূর্ব কাজিরগাঁও গ্রামের মোহন গাজী বাড়ির লিয়াকত আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, পারিবারিক সম্মতিতে ইসলামী শরিয়াহ্ মোতাবেক মরিয়ম ও মহিন উদ্দিনের বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান আছে। বিয়ের সময় মরিয়মের বাবা মহিনকে স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ টাকা দেন। এর পর মহিন নতুন ব্যবসা দেবেন এবং বিদেশে যাওয়ার কথা বলে বার বার মরিয়মের মাধ্যমে যৌতুক হিসেবে শ্বশুরের কাছ থেকে টাকা চান। এসব নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে বৈঠক হয় তাদের। ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে কোনো এক সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায় মহিন তার স্ত্রী মরিয়মকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
মরিয়মের বাবা নেয়ামত উল্লাহ মিজি বলেন, ঘটনার পরদিন ৩ নভেম্বর সকালে আমরা মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পাই। সেখানে গিয়ে আমার মেয়েকে শ্বশুর বাড়ির একটি দোচালা ঘরে পাতলা কাঁথা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখি। পরে পুলিশ এসে সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় ৭ নভেম্বর মরিয়মের বাবা নেয়ামত উল্লাহ মিজি হাজীগঞ্জ থানায় জামাতা মহিন উদ্দিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি আদালত গ্রহণের পর তদন্ত দেওয়া হয় পিবিআইকে। পিবিআই সেটির তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এতে মামলার পাঁচজন আসামির মধ্যে মহিন উদ্দিন ছাড়া বাকি চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামছুল ইসলাম মন্টু বলেন, মামলাটি প্রায় ৭ বছর চলমান অবস্থায় আদালত নয়জনের সাক্ষ্য নেন। সাক্ষ্যগ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইকবাল বিন বাশার ও বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট হান্নান কাজী।