চাঁদা তুলে খাল সংস্কার, নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর চাটখিলে স্থানীয়দের উদ্যোগে ৪ লাখ টাকা চাঁদা তুলে সংস্কার করা হয়েছে বীরেন্দ্র খাল। এতে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গেলে এমন চিত্র দেখা যায়। এরআগে সরকারিভাবে সোয়া কোটি টাকা খরচ করেও পানির এমন প্রবাহ দেখা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বীরেন্দ্র খালটি নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী খাল। এটি চাটখিল উপজেলার পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু দীর্ঘদিন দখল, দূষণের ফলে খালের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়। দুই বছর আগে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড এ খাল পরিষ্কারে এক কোটি ১৭ লাখ টাকা খরচ করলেও পৌর বাজার অংশে কোনো কাজই করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলা পরিষদের নামে খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ও বাজারের বর্জ্য ফেলে এটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করা হয়। কিছুদিন আগে খাল সংস্কার করতে আসলে দখলকারীরা এতে বাধা দেন। ফলে ঠিকাদার কাজ না করেই টাকা তুলে নিয়ে যান। এতে সাম্প্রতিক বন্যায় পানি আটকে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়।
স্থানীয় অশীতিপর বাসিন্দা মাহফুজ আলম বলেন, জেলার ঐতিহ্যবাহী এই বীরেন্দ্র খাল ২০০ বছরের পুরোনো। এখানে এক সময় সারি সারি পালতোলা নৌকা আসতো। বিভিন্ন স্থান থেকে বণিকরা এসে বাণিজ্য করতো। কালের আবর্তে তা হারিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে যার খেসারত দিচ্ছি আমরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বন্যার পানি না নামার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখি বীরেন্দ্র খালে পানি নামছে না। পরে উপজেলা প্রশাসন, বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় চারলাখ টাকা চাঁদা তুলে তিনটি খণনযন্ত্র (ভেকুমেশিন) দিয়ে এক সপ্তাহ পরিষ্কার করে পানি নামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে অনেকে স্বেচ্ছাশ্রমেও কাজ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আরও সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে। কয়েকদিনের মধ্যে সেটিরও সমাধান করা হবে। এরপর কাজ হচ্ছে এ খালটিকে দখলমুক্ত করা এবং সামনে আর দখল হতে না দেওয়া। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে অচিরেই সেই উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ছাত্র-জনতা ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সহায়তা নিয়ে পৌর বাজারের খালটি পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সাতদিন কাজ করার পর পানি প্রবাহ শুরু হয়েছে। এই পানি প্রবাহ ধরে রাখার জন্য পরবর্তী সময়ে যে কাজগুলো করার দরকার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে উপজেলা প্রশাসন সেগুলো বাস্তবায়ন করবে।
নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯.৩৫০ কিলোমিটার খালটি সংস্কারে এক কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। চাটখিল পৌর বাজারে জেলা পরিষদের কিছু লিজ দেওয়া স্থাপনা থাকায় ওই অংশে তখন মেশিনে খনন করা সম্ভব হয়নি। তারপরও শ্রমিক দিয়ে কিছুটা পরিষ্কার করা হয়েছিল।