চাইলেও তৃতীয় স্পিনার খেলাতে পারবে না বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২৪

ক্রীড়া ডেস্ক:

বাংলাদেশের বোলিংয়ের শক্তিই ছিল স্পিন। সাকিব আল হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, সোহরাওয়ার্দী শুভ, আরাফাত সানিদের নিয়ে বাঁহাতি স্পিনে বলীয়ান ছিল লম্বা সময়। অফস্পিনার সোহাগ গাজীর কথাও নিশ্চয়ই মনে থাকার কথা, যিনি কিনা ক্রিস গেইলের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন। মাহমুদউল্লাহও ছিলেন অলরাউন্ডার। নাসির হোসেনের বোলিংটা ভালোই কাজে লাগাতেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্পিন বোলিং নিয়ে চিন্তাই করতে হয়নি বাংলাদেশকে। সে দেশেই কিনা এখন মানসম্পন্ন স্পিনারের সংকট।

অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের জুটি লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন বেশি দিন হয় না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। বাংলাদেশ দল এখন তাদের ওপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল। শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠেয় প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেও এ দুই স্পিনারই ভরসা। টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলেও তৃতীয় স্পিনার খেলাতে পারবে না বাঁহাতি নাসুম আহমেদ দলের সঙ্গে না থাকায়। ভিসা জটিলতার কারণে নাসুম ও নাহিদ রানা গতকাল পর্যন্ত আরব আমিরাতে যেতে পারেননি।
সাকিব ও মিরাজ থাকায় এতদিন স্পিন নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। বাঁহাতি ও ডানহাতি দুই অলরাউন্ডারের সঙ্গে একজন স্পিনার খেলালেই হয়ে যেত। সাকিবের অনুপস্থিতি সে জায়গায় সংকট তৈরি করেছে। শুধু স্পিন না, ব্যাটিং লাইনআপেও টান পড়েছে। আগের মতো আর একজন বাড়তি ব্যাটার নিয়ে খেলার সুযোগ নেই। ওয়ানডে ম্যাচে নিয়মিত চারজন বোলার, একজন অলরাউন্ডার খেলালে ব্যাটিং লাইনআপ সাতজনের। তবে আজকের ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্তকে সমস্যায় ফেলতে পারে স্পিনারের ঘাটতি।

বর্তমানে যে ১৩ জন ক্রিকেটার শারজাহতে আছেন, সেখানে স্পিনার দু’জন। সে ক্ষেত্রে দুই স্পিনারের সঙ্গে তিন পেসার খেলাতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে ৫০ ওভার বোলিং কোটা পূরণের জন্য। নাহিদ না থাকায় পেস বিভাগেও টানাটানি লেগেছে। অর্থাৎ এ মুহূর্তে বাংলাদেশ দল ম্যানেজমেন্টের হাতে বাড়তি কোনো বোলার নেই। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম খেলবেন অটোচয়েস হিসেবে।
নাসুম থাকলে শারজাহর কন্ডিশন অনুযায়ী তিন স্পিনার খেলাতে পারতেন কোচ ফিল সিমন্স। একাদশে দু’জন পেসার নেওয়া হলে তৃতীয় পেসারের ভূমিকায় কাজে লাগানো যেত সৌম্য সরকারকে। কারণ দেশ-বিদেশে খেলা অনেক ম্যাচেই অলরাউন্ডার ভূমিকায় দেখা গেছে তাঁকে। স্লো মিডিয়াম বোলিং দিয়ে কখনও কখনও সফলও হয়েছে দল।

এ ক্ষেত্রে একাদশে ভারসাম্য আনতে হলে অনিয়মিত বোলার কাজে লাগাতে হবে। আফগানিস্তানের ব্যাটারদের ঝড় থামাতে অধিনায়ক হয়তো মাহমুদউল্লাহর হাতে বল তুলে দেবেন। অভিজ্ঞ এ অলরাউন্ডার চার-পাঁচ ওভার বোলিং করে দিতে পারলে কিছুটা চাপ কমতে পারে। যদিও বিকল্প বোলার কাজে লাগিয়ে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনারের শূন্যতা পূরণ করার নয়। জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেল বা টিম ম্যানেজমেন্ট দল ঘোষণার আগে বিষয়টি আরও ভালোভাবে ভেবে দেখলে ভালো করতেন। অনেক ক্রিকেটারের ভিসা আগে থেকে করে রাখলে ভালো হতো। তাইজুল ইসলামের ভিসা করা থাকলে বিকল্প হিসেবে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারতেন। নিদেনপক্ষে অফস্পিনার শেখ মেহেদির ভিসা থাকলেও স্পিনের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া যেত।

যদিও গতকাল জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেল ও বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে, নাসুম ও নাহিদ শারজাহ যাবেন। আজ সকালে গিয়ে পৌঁছালেও প্রথম ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা কম। বিসিবিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিসা হাতে পায়নি। আরব আমিরাত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ায় কড়াকড়ি থাকায় শেষ পর্যন্ত নাসুম ও রানা যেতে না পারলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি ১৩ জনকে নিয়ে খেলতে হতে পারে বাংলাদেশকে। হারের বৃত্তে আটকে থাকা বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্টের জন্য যেটা দুশ্চিন্তা বাড়াবে।