
ক্রীড়া ডেস্ক:
সাতক্ষীরায় আফঈদা খন্দকার প্রান্তিদের অন্যরকম আনন্দ বইছে। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তিন দিন আগে আফঈদা একুশে পদক প্রাপ্ত হয়েছেন। গতকাল আফঈদার মা মমতাজ খাতুন খুলনা বিভাগীয় অদম্য নারী পুরস্কার পেয়েছেন, আর গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বাফুফে ঘোষণা করেছে জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার। একসঙ্গে তিন তিনটি উপহার পেয়ে আফঈদাদের ঘরে যেন সুখের বন্যা।
নারী ফুটবলের অধিনায়ক ছিলেন সাবিনা খাতুন। আজ থেকে নতুন অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার প্রান্তি। নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচ এবং সাধারণ প্রীতি ম্যাচ খেলতে আজ সকালে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দুবাই যাবে। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে অপসারণের দাবিতে অনড় অবস্থানে থাকা বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার ছুটিতে চলে গেছেন। নতুন দল নিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আজ প্রথম দেশের বাইরে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। এই দলে আট জন ফুটবলার রয়েছেন, যারা সাফেও ছিলেন। তারাও যাচ্ছেন আজ। তবে এবারই প্রথম সাবিনা নেই নেতৃত্বে। নতুন অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার প্রান্তি একটা অস্বস্তিকর পরিবেশে দায়িত্ব পেয়েছেন। বয়সটাও কম। প্রান্তি বললেন, ‘চাপ নিলেই চাপ, না নিলে কিছুই না।’
প্রান্তির জন্য নেতৃত্ব নতুন কিছু নয়। অনূর্ধ্ব-২০ সাফেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি দেখেছেন কোচ পিটার। গতকাল সকালে ব্রাদার্সের মাঠে অনুশীলনের আগে অধিনায়ক প্রান্তির নাম ঘোষণা করেন কোচ পিটার। প্রান্তি বললেন, ‘এখানে দায়িত্ব নিয়ে ভাবাভাবির কিছু নেই। বাফুফে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি পালন করবো। বাফুফে যেভাবে চাইবে সেভাবেই করবো। আমি এখানে খেলতে এসেছি। যখন খেলতে পারবো না, চলে যাব।’
সাবিনাসহ বিদ্রোহ করা ফুটবলারদের অনুশীলনে। ফিরে আসা নিয়ে প্রান্তি বলেন, ‘আমি এখনো চাই উনারা ফিরে আসুক। আবার আমরা একটা দল হয়ে খেলবো।’ সাবিনারা ফিরে এলে যদি অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ফিরিয়ে নেয়? প্রান্তি বলেন, ‘আমার কাছে খারাপ লাগবে না। কারণ উনারা সিনিয়র প্লেয়ার। আমার চেয়েও উনারা যোগ্য হতে পারে। বেশি দিন হয়নি আমি সিনিয়র দলে এসেছি। ২০২৩ সালে জাতীয় দলের আমার অভিষেক হয়েছে। উনারা নেই দেখে আমার ওপর দায়িত্ব এসেছে। থাকলে হয়তো হতো না।’ কৃষ্ণা, সানজিদা, মারিয়া, মনিকাদের মিস করবেন কি না? প্রান্তি বলেন, ‘এখানে মিস করার কিছু নেই। আমি আমার খেলা খেলবো।’
রক্ষণভাগের ফুটবলার প্রান্তি। স্টপার হয়েও এরই মধ্যে ২ গোলও করেছেন তিনি। কথায় আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। একজন ডিফেন্ডারের মধ্যে যা থাকা দরকার তা রয়েছে। আঁখি খাতুন রক্ষণে খেলতেন, সে চলে যাওয়ার পর এই পজিশনটি ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। পরে মাসুরা এবং প্রান্তি এসে শূন্য জায়গা ভরাট করেন। মাসুরা বিদ্রোহীদের একজন। তিনিও ছুটিতে চলে গেছেন। এখন স্টপারব্যাক হিসেবে প্রান্তি ভরসা।
বিদ্রোহে থাকা ১৮ ফুটবলার না ফেরায় বাফুফে ২০২৬ সাফ চিন্তা করে নতুন দল গঠন করছে। এটা নিয়ে প্রান্তির মন-মানসিকতার ওপর চাপ আছে কি না, সেই প্রশ্নে প্রান্তির সহজ জবাব, ‘চেষ্টা করলে সবই হয়। এখনো যথেষ্ট সময় রয়েছে হাতে। আমরা চ্যাম্পিয়নটা ধরে রাখার চেষ্টা করবো। আপুরা এলে আরও ভালো হয়। আমরা আরও খুশি হবো। উনারা আসুক আমিও চাই সবাই একসঙ্গে আগের মতো হয়ে খেলি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই উনারা আসুক।’