কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদে যমুনা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের দুটি বার্জ (ভাসমান ডিপো) প্রায় ৭ বছর ধরে তেল শূন্য অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে ওই এলাকার কৃষি খাতে সেচসহ দৈনন্দিন কাজে চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো চাষ ব্যহতের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, তেলের ভাসমান দুই ডিপো দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। ফলে স্থানীয় এলাকার কৃষি কাজে ব্যবহৃত ডিজেল কিনতে হচ্ছে পার্বতীপুর (রংপুর) ডিপো থেকে। কাজেই বেড়েছে তেল পরিবহন খরচ। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বিষয়টি দ্রুত মীমাংসার দাবি জানান স্থানীয়রা।
অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা হ্রাসের কারণে তেল ভর্তি জাহাজ আসতে না পারায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
মূলত ১৯৮৯ সালে চিলমারীতে মেঘনা ও যমুনা কোম্পানীর দুটি ভাসমান তেল ডিপো স্থাপনের পর থেকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করে আসছে। দুই ডিপোর অনুমোদিত ২২জন ডিলার সরকারি দরে তেল কিনে এসব এলাকা খুচরা বিক্রি করতো। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি যমুনা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড ও ২২ ফেব্রয়ারি মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের তেল শেষ হওয়ার পর থেকে প্রায় ৭ বছর ধরে তেল সরবরাহ বন্ধ।
ডিপো কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভাসমান দুই তেল ডিপো থেকে চিলমারী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, নারায়নপুর, যাত্রাপুর, সাহেবের আলগা, রৌমারী, রাজিবপুর, সানন্দবাড়ী, জাফরগঞ্জ, কামারজানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সেচ মৌসুমে তেল সরবরাহ করা হয়। এ এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে ইঞ্জিন চালিত নৌকা, ড্রেজার মেশিন, জমি চাষের ট্রাক্টর, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চালিত জেনারেটর, মাহেন্দ্র গাড়ি এবং বিভিন্ন যন্ত্র চালনার জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার লিটার তেলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ভাসমান ডিপো দুটি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
স্থানীয় কৃষক সুজা মিয়া বলেন, ভাসমান তেল ডিপো থেকে তেল কিনলে সাশ্রয় হতো। কিন্তু ডিপোতে তেল না থাকায় বেশি দামে বাজার থেকে তেল কিনে চাষাবাদ করতে হচ্ছে। এতে খরচ যেমন বেড়েছে, চাষাবাদও ব্যহত হচ্ছে।
মেঘনা ডিপোর ইনচার্জ মহসীন আলী বলেন, ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা হ্রাসের কারণে তেল ভর্তি জাহাজ আসতে না পারায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।