চুয়াডাঙ্গায় ৮ শহীদের কবরের ওপর নির্মিত হলো স্মৃতিসৌধ ‘আটকবর’
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গায় যথাযথ মর্যাদায় আজ শনিবার (৫ আগস্ট) স্থানীয় শহীদ দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহে আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ সমরে শহীদ হন। দেশ স্বাধীনের পর আট শহীদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে ৫ আগস্ট স্থানীয় শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে এদিন জেলার আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান জামান, সাইফুদ্দিন তারেক, রওশন আলম, আলাউল ইসলাম খোকন, আবুল কাশেম, রবিউল ইসলাম, কিয়ামুদ্দিন ও আফাজ উদ্দিন শহীদ হন।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে দামুড়হুদায় আট শহীদের গণকবর স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর প্রমুখ।
ওইদিন সম্মুখ সমরে বেঁচে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আসগর আলী ফটিক। ওইদিনের ঘটনা স্মারণ করে তিনি জাগো নিউজকে জানান, ৫ আগস্ট সকালে পাকিস্তানি দালাল কুবাদ খানের দুজন লোক চাতুরতার আশ্রয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে এসে খবর দেন, রাজাকাররা তাদের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের এ কথা বিশ্বাস করে মুক্তিযোদ্ধা হাসান জামানের নেতৃত্বে তারা একদল মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র নিয়ে বাগোয়ান গ্রামের মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিমে দু দলে বিভক্ত হয়ে অগ্রসর হতে থাকেন। নাটুদহ ক্যাম্পের পাকসেনারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাঠের আখক্ষেতে লুকিয়ে থাকেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের অ্যাম্বুশের মধ্যে পড়ে যান। তখন পাকসেনাদের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টা সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের কৌশলে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে শত্রুকে আক্রমণ করতে থাকেন। এ অবস্থায় যেকোনো একজনকে কাভারিং ফায়ার দিয়ে নিজ দলকে বাঁচাতে হয়। মুক্তিযোদ্ধা হাসান জামান সেই ফায়ারের দায়িত্ব নিয়ে শহীদ হন। এসময় অন্য সাথীদের বাঁচাতে সক্ষম হলেও সম্মুখ সমরে শহীদ হন আটজন বীর। ওই সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীর অনেক সদস্য হতাহত হন। পরে জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিকামী মানুষ রাস্তার পাশে দুটি কবরে চারজন করে আটজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ দাফন করেন। কালক্রমে এ আটজন মুক্তিযোদ্ধার কবরকে ঘিরেই এ স্থানটির নামকরণ হয়েছে ‘আটকবর’।