চোরকে চিনে ফেলায় নটরডেম কলেজের অফিস সহকারীকে হত্যা

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪

ঢাকা প্রতিনিধি:

রাজধানীর পুরান ঢাকার নটরডেম কলেজের অফিস সহকারী লিপিকা গোমেজ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা বলছে, হত্যায় অভিযুক্ত জুয়েল রানার (২১) ধারণা ছিল, লিপিকার বাসায় বিপুল পরিমাণে অর্থসম্পদ রয়েছে। সেগুলো লুট করতেই ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় প্রবেশ করেন জুয়েল ও তার বন্ধু নজরুল (২২)। পরে লিপিকা জুয়েলকে চিনে ফেলায় লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়।
গতকাল রোববার রাজধানীর সদরঘাট ও পুরান ঢাকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যা জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পশ্চিমাঞ্চলের ডিআইজি সায়েদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান ও পুলিশ সুপার আবু ইউছুফ।

ডিআইজি সায়েদুর রহমান বলেন, পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার ৭৫ নং ঋষিকেশ দাস রোডের একটি বাসা থেকে ঢাকা নটরডেম কলেজের অফিস সহকারী লিপিকা গোমেজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দেশে-বিদেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত লিপিকা গোমেজ ১৮ বছর আগে তার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পরে একাই বসবাস করতেন। তার কোনো সন্তানাদি ছিল না।
গত ১০ সেপ্টেম্বর লিপিকা গোমেজ সর্বশেষ অফিস করেন। পরেরদিন কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার হেমন্ত পিউস রোজারিও লিপিকার সন্ধানে কলেজের দুই স্টাফ জনি ও জয়দেবকে তার বাসায় পাঠান।

ডিআইজি সায়েদুর রহমান আরও বলেন, নটরডেমের দুই স্টাফ জনি ও জয়দেব লিপিকা গোমেজের বাসায় গিয়ে কেয়ারটেকার মিতুকে নিয়ে বাসায় গিয়ে খাটের ওপরে তার মরদেহ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে সূত্রাপুর থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তার মাথায় বাম পাশে ভোতা অস্ত্রের আঘাত (কাটা দাগ) ও বিছানায়, বালিশে জমাট বাঁধা রক্ত দেখা যায়।
এ ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই প্রিন্স গোমেজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। ছায়া তদন্তের একপর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ এবং বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতার ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত সন্দেহে জুয়েল ও নজরুলকে আটক করা হয়।

পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দু’জনই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যায় ব্যবহৃত একটি নোজ প্লাস, দুইটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং চুরি যাওয়া বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুই আসামির বরাত দিয়ে ডিআইজি সায়েদুর বলেন, গ্রেপ্তার জুয়েল নজরুলদের মেসে খেতেন। সেখান থেকেই তাদের পরিচয় এবং ৭ থেকে ৮ বছরের বন্ধুত্ব। জুয়েল নজরুলকে জানান যে, তার পাশের বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় একজন নারী একা থাকেন। তার কোনো স্বামী-সন্তান নেই। তার বাসায় চুরি করলে অনেক টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে।