মোঃ সাইফুল ইসলাম
কোরবানির ঈদের আগে দেশের আলোচিত এগ্রো ফার্ম সাদিক এগ্রো থেকে ১২ লাখ টাকার ছাগল কেনার ঘোষণা দিয়ে ভাইরাল হওয়া তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাতকে নিয়ে তোলপাড় এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ প্রতিটা চায়ের আড্ডা। সঙ্গে বাবার নাম হিসেবে এক রাজস্ব কর্মকর্তার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় ইস্যুটি এখন টক অব দ্য টাউন। এরই মধ্যে মতিউর রহমান নামে ওই রাজস্ব কর্মকর্তা ইফাতকে তার ছেলে হিসেবে অস্বীকার করে জন্ম দিয়েছেন আরেক বিতর্কের। সন্দেহের পাশাপাশি জনমনে এখন একটাই প্রশ্ন, তাহলে কে এই ইফাত? কেনই বা সে নিজের বাবার পরিচয় দিতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি মতিউর রহমানের নাম নিল?
এ ব্যাপারে রাজস্ব বোর্ডের এ কর্মকর্তার দাবি, নিশ্চয়ই এই ঘটনার পেছনে কারও দুরভিসন্ধি আছে।
গণমাধ্যমকে মতিউর রহমান বলেন, আমার এক ছেলে, এক মেয়ে। আমার ছেলের নাম আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব। আর মেয়ের নাম ফারজানা রহমান ইপ্সিতা। আমার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতির ওপর পড়াশুনা করে দেশে এসেছে এক বছর আগে। আর মেয়েটা তার সাত বছরের সন্তান আর স্বামী নিয়ে স্থায়ীভাবে কানাডায় থাকে।
ইফাতকে চেনেন না দাবি করে তিনি বলেন, মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে আমার কোনও সন্তান নেই। ওই পরিবারের সঙ্গে আমার দূরতম সম্পর্কও নেই। তাদের বাসা ধানমণ্ডিতে, আর আমি থাকি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে আমার।
কেন ‘রহস্যজনক’ মনে হচ্ছে, এর ব্যাখ্যায় রাজস্ব বোর্ডের এ কর্মকর্তা জানান, গত মাসে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের সময় রায়পুরায় একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ওই নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। নতুন করে তফসিল ঘোষণা করলে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে তার স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী একজন ক্যান্ডিডেট। তাই তার পরিবারের সম্মানহানি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যেও কেউ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তার।
এদিকে এ বিষয়ে স্পষ্ট হতে ইফাতের ধানমন্ডির বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে। পরে তার মুঠোফোনে কল করে লাইনে পাওয়া গেলে অপরপ্রান্ত থেকে সে বলে, ছাগলটি আসলে কেনেনি সে। সাদিক এগ্রোর মালিকের কথামতো ছাগল কেনার অভিনয় করেছে মাত্র।
ইফাতের ভাষ্য, সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান তার খুব কাছের একজন ভাই। তিনি তাকে বলেন, ‘খাসিটাকে একটা থাপ্পর দাও, তাহলে দেখ সে কি করে।’ তার কথামতোই কাজটি করেছেন ইফাত এবং তারপর ছবি ও ভিডিও করেছেন।
কিন্তু সাদিক এগ্রো বলছে, ইফাত ছাগলটি কেনার জন্য ১ লাখ টাকা বায়না দিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার পর আর নেননি। সাদিক এগ্রোতে গিয়ে সেরকম একটি ছাগল বাধা অবস্থায় দেখতেও পাওয়া যায়।