ছিলেন প্রভাষক হলেন প্রতারক

প্রকাশিত: ৬:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২৩

এসএম দেলোয়ার হোসেন:
মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা রাজধানীর একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন সাইদুল। ছিলেন মেহেরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক। অবশেষে অধিক মুনাফার লোভে জাপানে পাঠানোর নামে গড়ে তোলেন ওয়েসিস নেটলিংক লিমিটেড (OASIS Net Link Ltd) নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তিনি। জাপানে পাঠানোর নামে অর্ধশত ব্যক্তির কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৭৫ লাখ টাকা। বিদেশগমনেচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় তিনি হলেন এখন প্রতারক। ভুক্তভোগীর এমন অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর বেরিয়ে আসে প্রভাষক থেকে প্রতারক হওয়ার কাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে নিউজ পোস্টকে এসব তথ্য জানিয়েছেন রাজধানীর মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জাপানে পাঠানোর নামে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাইদুল। গ্রেফতার সাইদুল ছিলেন রাজধানীর মেহেরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক। অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজেও। কিন্তু তিনি এখন প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার।

ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গ্রেফতার সাইদুল ওয়েসিস নেটলিংক লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসডবিøউ (SSW) এবং টিআইটিপি (TITP) ক্যাটাগরিতে ওয়ার্কিং ভিসায় জাপানে লোক পাঠানো হয় বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। অথচ তার প্রতিষ্ঠান শুধু জাপানি ভাষা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই লাইসেন্সপ্রাপ্ত। জাপানে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন, ভিসা প্রসেসিং ফি, মেডিকেল ফিসহ অন্যান্য খরচ বাবদ জনপ্রতি এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন সাইদুল।


ওসি মহসীন বলেন, এভাবে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। টাকা পাওয়ার দুই মাসের মধ্যেই তাদের জাপানে পাঠানোর কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নানা তালবাহানা শুরু করে। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলে গ্রেফতার করা হয় সাইদুলকে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার সাইদুল একসময় শিক্ষকতা করতেন। তিনি ২০০৫ সালে মেহেরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। এরপর যোগ দেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজে। সেখানে তিনি সহযোগী অধ্যাপক ও রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে ব্যবসায় নামেন। কয়েকটি ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তিনি এই প্রতারণার পথ বেছে নেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মোহাম্মদ মহসীন।