ছেলের পাসের খবরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শহীদ রায়হানের বাবা-মা

প্রকাশিত: ২:৫৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২৪

নোয়াখালী  প্রতিনিধি:

শহীদ মো. রায়হানের মৃত্যুর প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। রায়হান এখন শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন কবরে। কিন্তু পৃথিবীতে রেখে গেছেন তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হওয়া রায়হান। তিনি জিপিএ ২.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজী বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেন ও আমেনা দম্পতির একমাত্র ছেলে। তিনি রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ফল জানতে পারে তার পরিবার। ফল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগদান করলে গুলিবিদ্ধ হন রায়হান। এরপর ৬ আগস্ট দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন।
রায়হানের একমাত্র বোন উর্মি আক্তার বলেন, আমার ভাই অনেক ভালো ছাত্র ছিল। তার আচরণ কখনো খারাপ ছিল না। তার জন্য বাবা-মা সব সময় কান্না করেন। ফলাফল দেওয়ার খবর শুনে বাবা-মা কান্না করছেন। আমার ভাই বেঁচে থাকলে সবাই খুশি হতো।
রায়হানের মা আমেনা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে বেঁচে নেই, তার এই ফল দিয়ে কী হবে? সে পাস করসে তা দিয়ে এখন কি করব। তার আরও ভালো রেজাল্ট করার কথা। সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা এখনও কান্না করছেন। নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাইয়েছি। তাকে ঢাকায় পড়ালেখা করাইসি। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন বুলেটে শেষ হয়ে গেছে।

তার সহপাঠী মুশফিকুর রহমান সিফাত বলেন, রায়হান মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার তো এ প্লাস পাওয়ার কথা। তার রেজাল্ট দেখে আমরা মর্মাহত হয়েছি।

গুলশান কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এম এ কালাম বলেন, আমাদের কলেজ থেকে এ বছর রায়হানসহ ৩৯৪ জন বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারমধ্যে ৩৮১ জন পাস করেছে। রায়হান জিপিএ ২.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার ফলাফল আরও ভালো হওয়ার কথা। কিভাবে এত খারাপ হলো তা আমাদের জানা নেই। তবে তার মৃত্যু আমাদের এখনও কাঁদায়। সরকার যেন তার পরিবারের সঙ্গে থাকে সে আশা করছি।