ক্রীড়া ডেস্ক:
ফুটবলে প্রথম নারী ফিফা রেফারি জয়া চাকমা একটা স্বপ্ন দেখেন। দেশের পেশাদার ফুটবল লিগের ম্যাচ পরিচালনা করতে চান তিনি। স্বপ্ন দেখেন দেশের বড় ম্যাচ, হোক সেটা মোহামেডান, আবাহনী কিংবা বসুন্ধরা কিংসের খেলা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ পরিচালনা করবেন তিনি। নিজেকে সেভাবে তৈরি করবেন। সামনে এখনো সময় রয়েছে, দেশের ফুটবলের বড় মঞ্চে পা রাখতে হলে প্রস্তুতি নিবেন।
কিন্তু জয়ার দুর্ভাগ্য হচ্ছে তার পিঠে সমস্যা। ব্যাকপেইন রয়েছে। সার্জারি করাতে হবে। এ অবস্থায় ফিফার নতুন পরীক্ষা দিয়েছিলেন কিন্তু সেটিতে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আগামী ২০২৫ সালের জন্য ফিফা রেফারির ব্যাজ পাচ্ছেন না জয়া। এ নিয়ে মনটাও ভালো না তার। একদিকে ব্যাকপেইন, অন্যদিকে মাসলে শক্তি কমে গেছে। তারও কারণ আছে, মহিলা ফুটবল লিগ শেষ হওয়ার পর জয়া জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছেন
জানা গেছে, টানা পরিশ্রমে জয়ার মাসল পূর্ণ শক্তি পাচ্ছে না। প্রয়োজন বিশ্রাম। দৈনন্দিন কাজ করে বিশ্রাম নেওয়া যায়, কিন্তু টানা বিশ্রাম নেওয়া কঠিন। মাসলে শক্তি কমে গেলেও বড় সমস্যা হচ্ছে পিঠের সমস্যা। ভারতে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন জয়া। ডাক্তাররা অস্ত্রোপচার করতে বলেছেন। একে একে চার জন ডাক্তার দেখিয়েছেন। সবার একই কথা, অস্ত্রোপচার করাতে হবে। জয়ার দুশ্চিন্তা হচ্ছে অস্ত্রোপচার করালেও কি পূর্ণ সুস্থ হবেন? গ্যারান্টি নেই। কারণ জয়াকে ফুটবল মাঠে দৌড়াতে হবে। কখনো বড় ম্যাচ, কখনো কম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।
যেটাই হোক, খেলায় বাঁশি বাজাতে হলে জয়াকে দৌড়াতে হবে। জয়া বললেন, ‘ডাক্তাররা বলছে সার্জারি করালে ভালো হবে। কিন্তু গ্যারান্টি নেই। আমি ফুটবল মাঠে আগের মতো দৌড়াতে পারব কিনা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। এখন যেভাবে রয়েছি সেভাবে সুস্থ হওয়া যায় কিনা সেটাই চেষ্টা করছি।’
জয়া এবার ফিফা রেফারি পরীক্ষায় ভালো করেননি। বলছিলেন, ‘২০১১ সাল থেকে স্প্রিন্ট দিয়ে আসছি। কখনো ফেইল করিনি। এবার ভালো হয়নি। ২০২৫ ফিফা ব্যাজ পাব না।’ ২০২৫ সালের জন্য ফিফা ব্যাজ না পেলেও আগামী অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে নেপালে, সাফের ম্যাচ চালাতে পারবেন জয়া। কারণ এখনকার ফিফা ব্যাজের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েছে।
এরপর সিনিয়র ফুটবল টুর্নামেন্টে বাঁশি বাজাতে পারবেন না। জুনিয়ার টুর্নামেন্ট হলে সেখানে ফিফা রেফারি বাধ্যতামূলক না হওয়ায় জয়া খেলা চালাতে পারবেন। জয়া ফুটবলার ছিলেন। ফুটবলকে ভালোবাসেন। যে কারণে খেলা ছাড়লেও ফুটবল ছাড়েননি। সামনে ফুটবল নিয়েই থাকতে চান। জয়া বললেন, ‘আমি নিজেকে তৈরি করছি। ভবিষ্যতে আরো ভালোভাবে মাঠে ফেরার চেষ্টা করছি।’